মিলন গোস্বামী, বীরভূম
রামনবমীর দিন যারা অশান্তি ছড়িয়েছে তাদের উলটো দিকে ঝুলিয়ে উচিত শিক্ষা দেবে বিজেপি সরকার। শক্তিপুরে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাভনী প্রচারে এসে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পাশাপাশি সন্দেশখালির ঘটনার দোষিদের উচিত শিক্ষা দেবে বিজেপি। বাংলায় উত্তরপ্রদেশের শাসন আনার দাবি তুললেন।
এবার মোদির সুরেই আত্মনির্ভর ভারত গড়ার আহ্বান জানালেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সিউড়ি বেণীমাধব হাই ßুñল ময়দানে। মঙ্গলবার দুপুরে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্যের সমর্থনে নির্বাচনী জনসভায় এসে এই আহ্বান জানান তিনি। যোগী বলেন, ‘সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখে মোদি এবং বিজেপি সব সময় থাকে তাই মোদির হাত শক্ত করতে আর ভারতকে বিশ্বের দরবারে শীর্ষে নিয়ে যেতে হলে আত্মনির্ভর হতে হবে। তাই আত্মনির্ভর ভারত, বিকশিত ভারত হতে প্রয়োজন আত্মনির্ভর বাংলা।’ আর বাংলার এই উন্নয়নে বিজেপিকে দরকার মনে করিয়ে যোগী মনে করিয়ে দেন, ভারতীয় সংßৃñতির ভূমি এই বাংলাই বিশ্বকে পথ দেখাতো। আর আজ সেই বাংলা শেষ হয়ে গিয়েছে। সন্ত্রাস আর মাফিয়া রাজ সাধারণ মানুষের রক্ত চুষছে। এখানে রামনবমীতে শোভাযাত্রায় ঝামেলা হয়, দাঙ্গা হয়। কিন্তু তিনি মনে করিয়ে দেন, উত্তরপ্রদেশে রামনবমীর দিন শোভাযাত্রা বের হয়। কোনও দাঙ্গা হয় না। কারণ সব গুন্ডা ওখানে ঠান্ডা। যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘বাংলার মতই উত্তরপ্রদেশে প্যান্ডেল খাটিয়ে দুর্গা পুজো হয়। কিন্তু বাংলায় রামের নাম নিলে সরকার তাদের গ্রেপ্তার করে। তিনি বলেন, সাত বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন উত্তরপ্রদেশে কোনও দাঙ্গা হয়নি।
তার কথায়, ‘না কার্ফু না দাঙ্গা হ্যায়, ইউপি মে সব চাঙ্গা হ্যায়।’ আদিত্যনাথ বলেন, রামনবমীতে এই বাংলায় শোভাযাত্রায় ভাঙচুর হয়, দাঙ্গা হয় কিন্তু এই ঘটনা যদি উত্তরপ্রদেশে হয় তাহলে তাদেরকে উলটো করে টাঙিয়ে তাদের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং সাত পুরুষ দাঙ্গা করা ভুলে যাবে।
সিউড়ি বেনীমাধব হাই স্কুল ময়দানে বিজয় সংকল্প সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘ধর্মীয় ভিত্তিতে সংরক্ষণ বন্ধ করতে হবে। ’ তিনি মনে করিয়ে দেন, তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের আমলে পিছিয়ে পড়া জনজাতির ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের মধ্যে ৬ শতাংশ মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণের বিরোধিতা একমাত্র বিজেপি করেছিল। তিনি বলেন, বিজেপি সরকারের আমলে দেশ বিশ্ব দরবারে সমাদৃত হয়েছে মোদির নেতৃত্বে। ভারত যেমন আত্মনির্ভর হয়েছে তেমনই শক্তিশালী হয়েছে। এই সভা মঞ্চ থেকে তার দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা এই বাংলায় তৃণমূলরা হতে দেয় না। যেটুকু সহায়তা পাওয়া যায় তৃণমূলের গুন্ডারা আর নেতৃত্বরা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।
এরপর যোগী আদিত্যনাথ বাংলায় বালি এবং পাথর মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সরব হন। তিনি বলেন, মাফিয়ারা অবৈধভাবে বালি এবং পাথরের ব্যবসা করছেন। নদীর গতিপথ পাল্টে দিচ্ছেন এবং সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করছেন। তার দাবি, বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই সমস্ত মাফিয়াদের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেবেন।
এরপর তিনি বলেন, উত্তরপ্রদেশে এমন অনেক মাফিয়া ছিলেন যারা এখন উত্তর প্রদেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন, না হয় তাদের জাহান্নামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর মোদির প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদিজির নেতৃত্বে ভারত বিশ্বে মর্যাদা আসন ফিরে পেয়েছে। মোদির নেতৃত্বে ভারত আজ শক্তিশালী দেশ এবং আতঙ্কবাদ সন্ত্রাসবাদ অনেকটাই মুছে ফেলা গিয়েছে ভারতের নেতৃত্বে আজ গোটা বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ হতে চলেছে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায়। প্রতিবেশী পাকিস্তান এখন জানে ভুল করেও কোনও ঘটনা ঘটে গেলে ভারত চুপ করে থাকবে না। কারণ, মোদিজির নেতৃত্বে ভারত এখন নতুন ভারত ।