নিজস্ব প্রতিবেদন, বুদবুদ: ‘বিজেপি, সিপিএম বলছে তৃণমূল নাকি চুরি করে বেড়াচ্ছে। হ্যাঁ আমরা চোর, আমরা চুরি করেছি তবে বাংলার মানুষের মনে জায়গা করে, মন চুরি করেছি।’ পাশাপাশি নির্দল প্রার্থীদের কোনও ভাবেই আর দলে নেওয়া হবে না বলে স্পষ্টভাবে বুদবুদের সভা মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তাঁর জোরালো দাবি,তিনি বলেন, ‘আমরা সারা বছর মানুষের জন্য কাজ করছি, কিন্তু সারা বছর কংগ্রেস সিপিএম এবং বিজেপি সহ অন্যান্য দলগুলির দেখা মেলে না। তাই বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস বসন্তের কোকিলের মতো ভোট চাইতে বেরিয়ে পড়ে। তাঁদের প্রার্থীরা আজকে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন ভোট চাইতে। তাঁদেরকে যদি মানুষ জিজ্ঞাসা করে করোনার সময় আপনারা কোথায় ছিলেন তখন তাঁরা কী উত্তর দেবে।’ সিপিএমকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘সিপিএম এখন প্রচারে বেরিয়ে বলছে বাংলায় শুধু সন্ত্রাস চলছে। ৩৪ বছর ধরে বাংলা জুড়ে সিপিএম কী করেছে, তা সকলেই জানে। বর্ধমানের সাঁইবাড়িতে কর্মীর মাথা নিয়ে তারা ফুটবল খেলেছিল গোটা বাংলার মানুষ সাক্ষী আছে। বর্তমানে কিছু তরুণ ছাত্র যুবরা বাড়ি বাড়ি ভোট চাইতে যাচ্ছে। তারা নাকি রাজ্যে বিপ্লব আনবে। যেখানে বুদ্ধ, বিমান, অনিল পারল না, সেখানে ছাত্র যুবরা কি করবে, সেই নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আসন্ন পঞ্চয়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার বিকেলে তৃণমূলের মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থনে বুদবুদ থানা থেকে বুদবুদ বাজার পর্যন্ত হুডখোলা গাড়িতে করে রোড শো করলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এদিন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে রোড শোয়ে উপস্থিত ছিলেন গসলির বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই সহ গলসি ১নম্বর ব্লকের তৃণমূলের মনোনীত প্রার্থীরা। এদিন রোড শো শেষে বুদবুদ বাজারে তৃণমূলের প্রার্থীদের সমর্থনে সভা করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এদিন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে পিছিয়ে পড়া বাংলা তিনি হাতে পেয়েছিলেন, দু’লক্ষ তিন হাজার কোটি টাকা দেনার সঙ্গে। সেখান থেকে তিল তিল করে তিনি বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের একটাই লড়াই বাংলাকে ভারতবর্ষে শ্রেষ্ঠ জায়গায় নিয়ে যাওয়া।’
তিনি বলেন, ‘আজ যেভাবে কর্মীরা বিজয় উৎসবের মনোভাব নিয়ে আসলে সামিল হয়েছিলেন, এটা কোনও বিজয় নয়, উৎসব সেদিন হবে যেদিন নরেন্দ্র মোদি ভারত ছাড়বে।’ তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচনে দিল্লি থেকে হেলিকপ্টারে অনেক মোটা মোটা লোক বাংলায় এল, আর ইসবার ২০০ পার বলতে শুরু করল। কিন্তু শেষমেশ ফল সবার সামনে উঠে এল।’ তিনি বলেন, ‘বিজেপির হাতে সিবিআই-ইডি রয়েছে। আমাদের কাছে শুধু মানুষ আছে মানুষের থেকে বড় গণতন্ত্র আর কিছু হয় না।’ এদিন বিজেপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘রাম সবার মনে আছে। রামকে নিজেদের প্রপার্টি বানিও না। বাংলায় সব ধর্মের মানুষ বসবাস করে বিজেপি ধর্ম নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের সব ধর্মের মানুষের বাড়িতে কেক আসে এবং সকলেই কেক খায়। কিন্তু কেক খেলেই কেউ খ্রিস্টান হয় না। আমরা সবাই বিহারীদের ছট পুজোয় যেমন সামিল হই, তেমনই মুসলিমদের বাড়িতে গিয়েও ইদের দিন সিমুই খাই। যার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ধর্ম আমার ধর্ম তোমার উৎসব সবার।’
এদিন তিনি আরও বলেন, ‘বিজেপি হল একটা ওয়াশিং মেশিন, কেউ যত দুর্নীতিবাজ হোক না কেন ওয়াশিং মেশিনে পড়েই তার সমস্ত দুর্নীতি অপরাধ সাফ হয়ে যায়। একদিকে বিজেপি লক্ষী ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে কটাক্ষ করছে, আবার সেই ৫০০ টাকার বিনিময়ে দু’ হাজার টাকা দাবি করে আন্দোলনে নামছে।’