ওই যে কথায় আছে, মা মা-ই হন। মান-অভিমান যতই থাক, সে সব থিতিয়ে গেলে মার প্রাণ সন্তানের জন্য আকুল হবেই।
দেখতে দেখতে বছর ঘুরেছে। দামী ফ্ল্যাটে থাকা, নামী গাড়িতে চড়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা জেলব¨ি। অর্পিতার গ্রেপ্তারির সময় সংবাদ মাধ্যমের হাজারও প্রশ্নের সামনে সংকুচিত হয়ে পড়েছিলেন তাঁর বয়স্কা মা মিনতি চট্টোপাধ্যায়। প্রবল অভিমানে মেয়ের নামেও বিরক্ত হয়েছিলেন একসময়। সেই মা এখন মেয়ের কথাই ভাবছেন। তাঁর আশা, মেয়ে ঠিক ছাড়া পাবে। বয়স্কা মিনতিদেবীর কথায়, ‘মেয়ে ঠিক জামিন পাবে। কারণ, ও কিছু জানলে সবই নিশ্চয়ই বলেছে। ও তো আর চাকরি কেনাবেচা করেনি। তা হলে জামিন পাবে না কেন?’ সেই সঙ্গে মায়ের কথা, ছাড়া পেলে মেয়ে কোথায় যাবে। পৈতৃক বাড়িতেই আসতে হবে তাকে।
প্রসঙ্গত, পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের একের পর এক ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ, গয়না, নথি উদ্ধারের ঘটনায় একসময় সংবাদ শিরোণামে ছিলেন মডেল ও অভিনেত্রী। গত বছর ২২ জুলাই দুপুরে অর্পিতার ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল ইডি। টাকা উদ্ধারের পর তদন্তের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার হন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেপ্তারির পর দীর্ঘ ১০ মাস জামিনের আবেদন করেননি অর্পিতা। শেষ পর্যন্ত গত মে মাসে জামিনের আবেদন করেন তিনি। শুনানিতে সশরীরে অর্পিতাকে হাজির করানো হয় আদালতে। তাঁর হয়ে সওয়াল করেন দিল্লির দুঁদে আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার। যিনি পার্থকেই নিয়োগ দুর্নীতির ‘মাস্টার মাইন্ড’ বলে দাবি করেন এজলাসে। অন্য দিকে, ইডির তরফ থেকে বলা হয়, পার্থ যদি ‘রাজা’ হন, তা হলে অর্পিতা ‘ডিফ্যাক্টো রানি’ (প্রকৃত রানি)।
বেলঘরিয়া দেওয়ান পাড়ায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের পৈতৃক বাড়ি। সেই বাড়ি এখন নোনা ধরা। সর্বত্র অযত্নের ছাপ। সেখানেই চোখে গ্লুকোমা, অশক্ত শরীর নিয়ে জীবন কাটছে অর্পিতার মা মিনতির। অপেক্ষায় রয়েছেন মেয়েটার ফেরার। তাঁর আশা মেয়ে ঠিকই ফিরবে। ভাঙা বাড়িতেই হয়তো শেষের জীবনটা মেয়ের সঙ্গে নতুন করে শুরু করবেন তিনি।