বিশ্বে প্রথম, কলকাতার বাসিন্দার শরীরে থাবা উদ্ভিদজাত ফাঙ্গাসের

বিশ্বে এই প্রথম। মানুষের শরীরে থাবা বসালো উদ্ভিদজাত ফাঙ্গাস। আর তার দেখা মিলল একেবারে খোদ কলকাতাতেই। মারণ এই ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ব্যক্তি বর্তমানে এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে সূত্রে খবর।
তবে এমন নজিরবিহান ঘটনা কী করে ঘটল সে ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে এখনই কিছু বলতে পারছেন না চিকিৎসকেরা। তবে অনুমান করা হচ্ছে যিনি এই রোগের শিকার হয়েছেন তিনি পেশায় পেশায় মাইকোলজিস্ট এই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে মাশরুম নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। এছাড়াও ক্ষয়প্রাপ্ত ফাঙ্গাস, উদ্ভিদজাত ফাঙ্গি নিয়ে তাঁর কারবার। এই প্রসঙ্গে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, উদ্ভিদজাত ওই মারণ ফাঙ্গাস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার ফলেই এই ব্যক্তির শরীরে বাসা বাঁধে ফাঙ্গাসটি। যদিও এই ঘটনা নজিরবিহীন। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি মেডিক্যাল মাইকোলজি কেস রিপোর্ট জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
একইসঙ্গে ওই বেসরকারি হাসপাতালের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে যে, ফাঙ্গাসটির বৈজ্ঞানিক নাম কনড্রোস্টেরেয়াম পারপারেনাম । মূলত কোনও গাছে এই ফাঙ্গাস বাসা বাঁধলে, গাছের পাতা রুপোলি হয়ে যায়। কাণ্ডে ক্ষত সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত গাছটির মৃত্যু হয়। জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্ষয়প্রাপ্ত গাছগাছালি নিয়ে আরও পরীক্ষা চালানোর পরই বোঝা সম্ভব কী ভাবে ফাঙ্গাস ক্ষতিসাধণ করে। কী ভাবে এর থেকে প্রতিকার সম্ভব। তবে এখনও তা নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য সামনে আসেনি।
সঙ্গে চিকিৎসকেরা এও জানিয়েছেন, কলকাতার বাসিন্দা ওই উদ্ভিদ গবেষক কাশি, গলা ব্যথা, ফ্যারেনজাইটিস, খাবার গেলার সমস্যা নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে যান। তাঁর সুগারের সমস্যা নেই। এইচআইভি বা অন্য কোনও জটিল অসুখও ধরা পড়েনি কখনও। নিয়মিত কোনও ওষুধও খান না তিনি। সাধারণ কোনও টেস্টে শরীরে কিছু ধরা না পড়লেও অবশেষে একটি প্যারাট্র্যাকিয়াল অর্থাৎ গলার টেস্ট এই ফাঙ্গাসের উপস্থিতি ধরিয়ে দেয়। মাইক্রোস্কোপি ও কালচারে সংক্রমণের স্বরূপ বোঝা যায়নি। তাঁর শ্বাসনালীর পাশে একটি ঘা যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় প্যারা-ট্র্যাকিয়াল অ্যাবসেস বলা হয় তা ধরা পড়ে। জিন বিশ্লেষণে বোঝা যায়, সংক্রমণটা আদতে কন্ড্রোস্টেরিয়াম পারপিউরিয়াম ছত্রাকের। আর এই ছত্রাকের হাত থেকে বাঁচাতে আপাতত ওরাল অ্যান্টিফাঙ্গাল থেরাপি দেওয়া হচ্ছে আক্রান্তকে। তবে এই ফাঙ্গাস মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ায় ফাঙ্গি সংক্রমণ নিয়ে এক নতুন দিগন্ত যে চিকিৎসকদের সামনে খুলে গেল তা জানান ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × four =