বার্লিনে বিশ্বসংস্কৃতির মহামিছিল

বার্লিন, ২০ মে: বার্লিনের রাজপথে আবার নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষের মিলনমেলা। ঐতিহ্যবাহী রঙিন জমকালো পোশাকে সজ্জিত সংস্কৃতিকর্মীদের পায়ে পায়ে বর্ণিল হয়ে উঠল বার্লিনের রাজপথ। এ যেন বিশ্বসংস্কৃতির মহামিছিল। এটা ছিল বার্লিনের আন্তঃসংস্কৃতি কার্নিভ্যাল।
এবার ২৬ বছরে পড়ল বার্লিনের এই কার্নিভ্যাল। জার্মান ভাষায় পোশাকি নাম ‘কার্নিভ্যাল ডের কলটুর’। ১৯৯৬ সালে জার্মানিতে থাকা বিদেশিদের প্রতি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানাতেই এই উৎসব চালু হয়। সেই থেকেই চলছে। এখন প্রতিবাদী সংস্কৃতির মিছিল এখন বিশ্বসংস্কৃতির মহামিছিলে পরিণত হয়েছে। তবে সেই প্রতীকী প্রতিবাদের আবেদন বেড়েছে। জার্মান তথা ইউরোপে ধর্ম-বর্ণ-অভিবাসীবিরোধী ও জাতীয়তাবাদী কট্টরপন্থীদের রুখতে তাই বিশ্বসংস্কৃতির মহামিছিল আরও উচ্চকিত।
রবিবার বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা নানা ধর্মের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল বার্লিনের রাজপথ। দক্ষিণ ইউরোপের ব্রাজিল, পেরু, বলিভিয়ার অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে ছিল আফ্রিকার নানা দেশ এবং ক্যারিবিয়ান দেশগুলো প্রতিনিধিরা। আর ছিল এশিয়ার নানা দেশের ৬০টি সাংস্কৃতিক দল। বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের বর্ণাঢ্য জমকালো পোশাক আর গানবাজনার তালে বার্লিনের রাজপথে ছন্দ, তাল, লয়ে বর্ণিল হয়ে উঠেছিল।
এই মহামিছিলে বাংলাদেশও অংশ নিয়েছিল। ছিল বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতির গান আর নাচ। নীল আকাশের নীচে বার্লিন শহরের প্রাণকেন্দ্র মেরিংডাম থেকে হারমান স্কোয়ার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে যেন বিশ্বসংস্কৃতির মেলা বসেছিল। রাজপথের দু’ধারে ৬৫০ হাজার মানুষ করতালি আর সমস্বরে আনন্দধ্বনি দিয়ে পুরো পরিবেশ উৎসবমুখর করে তোলে।
বাঙালি জাতিসত্তার অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক ধারণা ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেই বাঙালিদের এই উদ্যোগ। বার্লিন তথা জার্মানপ্রবাসী বাঙালিরা দীর্ঘদিন ধরেই এই মহাযাত্রার অন্যতম শরিক। আর এবারের যাত্রায় বাঙালিদের মূল বিষয় ছিল ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দক্ষিণ এশিয়া। সেই ২০০২ সাল থেকেই প্রবাসী বাঙালিরা, বার্লিনের বিশ্বসংস্কৃতির মহাযাত্রার সহযাত্রী হয়েছেন।
বার্লিনের আন্তঃসংস্কৃতি কার্নিভ্যালের মূল অনুষ্ঠানের আগের দিন শনিবার শিশু, কিশোরদের জন্য আয়োজিত কার্নিভ্যালে এই প্রথম বাঙালি শিশু, কিশোররা অংশ নিয়ে নজর কেড়েছে। শিশু, কিশোরদের মঞ্চানুষ্ঠান পুরস্কৃত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − twelve =