কেউ যদি মনে করেন অন্য দল থেকে প্রার্থী হয়ে জিতব, আর পরবর্তীতে তৃণমূলে যোগদান দেব এটা চলবে না। নিঃস্বার্থে যদি দল করতে হয় তাহলে এখনই আপনারা অন্য দল থেকে সরে দাঁড়ান। একজন দলীয় সৈনিক হিসেবে তৃণমূলে যোগ দিন। দল আপনাদের স্বাগত জানাবে। কিন্তু সুবিধা নেওয়ার জন্য পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর তৃণমূলে যোগ দেব, তা হবে না। সোমবার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে কর্মিসভায় এভাবেই বিরোধী দলের প্রার্থীদের সাফ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর। এদিন কালিয়াচক ৩ ব্লকের প্রথমে ভগবানপুর এবং বিকেলে কৃষ্ণপুর এলাকায় দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার সারেন সাংসদ মৌসম নুর। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন কালিয়াচক ৩ ব্লকের অন্তর্গত বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল দলের বিধায়ক চন্দনা সরকার সহ দলের অন্যান্য নেতৃত্বরা। এদিন সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের তৃণমূল দলের প্রার্থীদের সমর্থনেই নির্বাচনী প্রচার সারেন সাংসদ মৌসুম নুর।
এদিনের কর্মী সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর বলেন, কেউ নির্দল থেকে দাঁড়িয়েছেন, আবার কেউ অন্য দল থেকে দাঁড়িয়েছেন। হয়তো তারা ভাবছেন যদি ভোটে জয়ী হই, তাহলে সুযোগ বুঝে তৃণমূলে যোগদান করে ফেলবেন। নিজেদের স্বার্থের কথা ভেবে অন্য দলে প্রার্থী হয়ে জেতার আশা করছেন। আর পরবর্তীতে সুবিধা নেওয়ার জন্য তৃণমূলে যোগ দেবেন, এটা হতে দেওয়া যাবে না। যদি সত্যিই আপনারা তৃণমূল দলকে ভালোবাসেন, তাহলে এখনও সময় আছে আপনারা সরে দাঁড়ান এবং তৃণমূলে যোগ দিন।
সাংসদ মৌসম নুর আরও বলেন, মালদা এখন যা পরিস্থিতি তাতে বিরোধীদলের প্রার্থীদের কোনও জায়গা নেই। সর্বত্রই তৃণমূলের জয়জয়কার। কারণ একটাই, আমাদের দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী সহ একাধিক প্রকল্প সাধারণ মানুষের জন্য করে দিয়েছেন। সুতরাং বিরোধীদের কথা এখন সাধারণ মানুষ শুনতে চাইছে না। ভোটের সময় সুবিধাবাদী বিরোধী দলের কিছু নেতা-নেত্রীদের দেখা যায়। যা এখন দেখা যাচ্ছে। অনেকেই ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্য নানান ধরনের জিনিস দেবেন। আমি বলছি, আপনারা সেই সব জিনিস গ্রহণ করুন, কিন্তু ভোটটা তৃণমূলকে দিন। সাংসদ মৌসম নুর আরও বলেন, গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ১০০ দিনের টাকা আটকে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ কাজ পাচ্ছে না। জবকার্ড থাকলেও ১০০ দিনের টাকা বরাদ্দ না হয় সমস্যায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। এর জন্য দায়ী বিজেপি সরকার। আর তাদের মদত যোগাচ্ছে বাম এবং কংগ্রেস। সুতরাং আপনাদের সকলকে মনে রাখতে হবে বিরোধীরা এখন তৃণমূলকে পরাজিত করতে তলে তলে গোপন আঁতাত করেছে। আর প্রকাশ্যে লোক দেখানি প্রচার করছে। বিশ্বাসঘাতকদের দলে জায়গা নেই। তবে এবারে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদায় বিরোধী শূন্য বোর্ড গঠন করবে তৃণমূল।
এদিকে তৃণমূল সাংসদের এই বক্তব্যকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপির মালদা জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি। তিনি বলেন, কে কার সঙ্গে তলে তলে গাঁটবন্ধন বেধে চলছে সেটা মানুষই জানে। দুর্নীতি, তোলাবাজিদের দল হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল। আর এখন তারা মুখে বড় বড় ভাষণ দিচ্ছে। মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন মাধ্যমেই নতুন পরিবর্তন আসতে চলেছে।