ওয়াটগঞ্জের পরিত্যক্ত এলাকা থেকে যুবতীর দেহাংশ উদ্ধারের ঘটনায় ক্রমে রহস্য জট পাকছে। খুন করে নারকীয়ভাবে মহিলার দেহাংশ টুকরো টুকরো করে ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে মত পুলিশের। এলাকার কোনও বাড়িতে সিসি ক্যামেরা আছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দেহাংশগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার হরিকৃষ্ণ পাই। হোমিসাইড শাখা এবং ডগ স্কোয়াডও ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছে। নিখোঁজ সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েছে কি না, সেই তালিকা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এলাকার বাসিন্দাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁরা কেউ কোনও সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখেছেন কি না, খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ।
পুলিশের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ২টো ৫০ মিনিটে তারা খবর পায়, ওয়াটগঞ্জের সত্য ডক্টর রোডে সিআইএসএফের পরিত্যক্ত ব্যারাকে অপরিচিত এক যুবতীর কাটা মাথা পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, তিনটি আলাদা প্লাস্টিকে মুড়ে দেহাংশ রাখা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, যুবতীর গোটা দেহ পাওয়া যায়নি। উদ্ধার হওয়া কালো প্লাস্টিকের একটিতে যুবতীর কাটা মাথা রাখা ছিল। সেই মাথায় সিঁদুরও পরা ছিল। কপালে ছিল টিপ। এর থেকে পুলিশের অনুমান, যুবতী বিবাহিত ছিলেন। মাথার অংশ যে প্লাস্টিকে ছিল, তার মধ্যেই একটি ভারী ইটও রাখা ছিল। মনে করা হচ্ছে, ওই প্লাস্টিক নদীর জলে ডুবিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলো দুস্কৃতীরা। দেহের টুকরো টুকরো কিছু অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দেহাংশগুলি তিনটি কালো প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রাখা ছিল। কে বা কারা যুবতীকে খুন করল, কখন, কী ভাবে দেহ ওই এলাকায় ফেলা হল, বাকি দেহাংশই বা কোথায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার বয়স আনুমানিক ৩০-৩৫ বছর। কালো প্লাস্টিক থেকে যুবতীর হাত পাওয়া যায়নি। বুকের অংশ মিললেও মেলেনি পেট। অন্য একটি প্লাস্টিকে পুলিশ যুবতীর কাটা পা পাওয়া গিয়েছে। তবে পায়ের পাতা পাওয়া যায়নি। পুলিশ মনে করছে, আগে যুবতীকে খুন করা হয়েছে। তার পর তাঁর দেহটি টুকরো টুকরো করে কাটা হয়েছে। তবে দেহের যে অংশগুলি পাওয়া গিয়েছে, তাতে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। ছিল না কোনও পোশাকও। ময়নাতদন্তের পর অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে আছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের অনুমান, অন্য কোথাও যুবতীকে খুন করা হয়েছে। পরে দেহ আনা হয়েছে ওয়াটগঞ্জের পরিত্যক্ত এলাকায়।