ফাইবারের ক্যারেটের বাক্সের জেরে কদর কমেছে বেতের তৈরি ডালির। আমের মরশুমে অধিকাংশ চাষি থেকে ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিকের ক্যারেট বক্স ব্যবহার করায় মালদার বাজারে বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি বালি এখন বিক্রি হচ্ছে না বলে বিক্রেতাদের অভিযোগ। যার ফলে এবারে অসংখ্য ডালি তৈরির কারিগরদের মাথায় হাত পড়েছে। প্রতিবছর মানিকচক ব্লকের শেখপুরা গ্রামের কারিগরেরা মালদার আম মার্কেটে ডালি বিক্রির বাজার নিয়ে বসেন। ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দামে বিক্রি হয়ে থাকে বেতের তৈরি ডালিগুলি। অথচ এখন ডালি কেনার আগ্রহ নেই আম ব্যবসায়ীদের। অথচ এর থেকে বেশি দাম দিয়ে ফাইবারের ক্যারেট বক্স কেনার আগ্রহ দেখাচ্ছেন চাষি থেকে ব্যবসায়ীরা। মালদার আমের আরত গাড়ি বোঝাই বেতের তৈরি ডালি নিয়ে এনে নিত্যদিন বসে থাকছেন বিক্রেতারা। দিনে হয়তো তিন থেকে চারটি ডালি বিক্রি হলেও লাভের কোনও অংশই তাদের উঠছে না। অথচ বিভিন্ন যানবাহন করে ফাইবারের ক্যারেট বক্স আরতে সরবরাহ হচ্ছে। আর তাতেই মজুত করা হচ্ছে আমি। এ নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তায় শেখপুরা গ্রামের ডালি তৈরির কারিগররা।
উল্লেখ্য, আমের মরশুমে শুরু হতেই বাঁশ ও বেতের তৈরি ডালি মালদার বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকে। এই বেতের তৈরি ডালিতে আম বাজারজাত করে রপ্তানি করা হয় বিভিন্ন এলাকায়।
মানিকচক ব্লকের শেখপুরা গ্রামের ডালি তৈরির কারিগরদের বক্তব্য, কয়েক বছর আগেও বাঁশ এবং বেতের তৈরি ডালির চাহিদা ব্যাপক ছিল। একটি ডালিতে ক্যারেট বক্সের থেকে বেশি পরিমাণ আম রাখা যায়। এবং সহজে আমে পচন ধরে না। কিন্তু এবছর ফাইবারের ক্যারেট বক্সের কারণে বেতের তৈরি ডালি কেনাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না আম ব্যবসায়ীরা। একেকটি ডালি তৈরি করতে ২৫ টাকা খরচ হয়। সেটিই মালদার বাজারে বিক্রি করা হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে। অথচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা পিস হিসেবে ফাইবারের ক্যারেট বক্স কিনছেন ব্যবসায়ীরা। তাতে আম কম পরিমাণ মজুত করা যায়। এই অবস্থায় এখন ডালি তৈরির কারবার ছেড়ে দিনমজুরির পেশাকে বেছে নিতে চাইছেন শেখপুরা গ্রামের অধিকাংশ পরিবার।
মালদা আম ব্যবসায়ী সমিতির এক সদস্য ফজলুল হক বলেন, বাঁশ ও বেতের তৈরি ডালি বছরে একবারই ব্যবহার করা যায়। কিন্তু ফাইবারের ক্যারেট বক্স কয়েক বছর চলে যায়। যার কারণে বেতের তৈরি ডালির কেনার প্রতি আগ্রহ নেই।
মালদা ম্যাংগো মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সম্পাদক উজ্জল সাহা জানিয়েছেন, ডালি তৈরির কারিগরদের সমস্যার কথা শুনেছি। কিন্তু গত কয়েক বছরে করোনাই যেভাবে সংকট গিয়েছে তাতে আম ব্যবসায়ীদের কি করার আছে। ওদের কাছে আগে থেকেই ফাইবার ক্যারেট বক্স মজুত রয়েছে। আপাতত সেগুলোর মাধ্যমে বাজারজাত করে আম রপ্তানি করা হচ্ছে।