ব্রিসবেনে ওপেন করবেন, চার পেসার?

নানা মুনির নানা মত। পরামর্শ আর টোটকার জোয়ারে ভাসছেন রোহিত শর্মা। কেউ তৈরি করে দিচ্ছেন একাদশ। কেউ বলে দিচ্ছে ব্যাটিং অর্ডার। স্পিনার থেকে বোলিং পরিবর্তন, পরামর্শ দেওয়া লোকের অভাব নেই। স্রেফ অ্যাডিলেডে হার কার্যত কোণঠাসা করে ফেলেছে রোহিত শর্মাকে। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টানা ৩টে ম্যাচ হার। তারপর অ্যাডিলেড। সব মিলিয়ে টানা ৪টে টেস্ট ম্যাচ হারের রেকর্ড করে বসেছেন রোহিত। যা পরিস্থিতি, ব্রিসবেনে যদি হারে টিম, তা হলে বিদায়ঘণ্টা বেজেই যাবে। এ হেন রোহিতের এখন ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ এই অবস্থা। সোজা কথায় বললে একাধিক সঙ্কট তাঁর সামনে।

রোহিত কি ওপেন করবেন গাব্বায়? রোহিত আদতে ওপেনার। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ওপেনই করেছেন। কিন্তু পারথে যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ভরসা দেওয়া রাহুলকেই অ্যাডিলেডে ওপেনার রাখা হয়েছিল। রোহিতের এই সিদ্ধান্তের পিছনে যুক্তি হিসেবে কাজ করেছিল, রাহুলের আত্মবিশ্বাস। প্রথমত, রোহিত পারথে খেলেননি। অ্যাডিলেড ছিল তাঁর প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয়ত, ভারতীয় এ টিমের সঙ্গে অনেক আগেই অস্ট্রেলিয়া সফরে চলে গিয়েছিলেন রাহুল। অজিদের দেশের পিচ পরিবেশের সঙ্গে যথেষ্ট মানিয়েও নিয়েছেন। সেই কারণে রাহুলকে ওপেনার হিসেবেই দেখা গিয়েছিল। মিডল অর্ডারে রোহিত নেমেছিলেন ঠিকই, কিন্তু ছাপ রাখতে পারেননি। ৬ ও ৩ মোট ৯ রান এসেছে রোহিতের ব্যাট থেকে। ফুটওয়ার্ক কার্যত ছিল না, শর্ট বলে অস্বস্তি এবং গতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারা, সবই বিরুদ্ধে গিয়েছিল রোহিতের। আর তার জন্য় সমালোচনাও কম হয়নি। কিন্তু পরিস্থিতি এখন একেবারেই অন্যরকম।

পারথ, অ্যাডিলেড ভুলে ভারতীয় টিম নতুন করে সিরিজ শুরু করতে চাইছে। সেই আঙ্গিকে ভাবলে রোহিতও নিতে পারেন ফ্রেশ স্টান্স। অর্থাৎ, গাব্বায় ওপেনার হিসেবেই নামুন তিনি। এর পিছনেও দুটো যুক্তি কাজ করছে। এক, রোহিত ওপেন করলে দ্রুত স্কোরবোর্ডকে মগডালে তুলে দিতে পারেন। দুই, রোহিতের মতো অভিজ্ঞ কাউকে ইনিংস শুরু করতে দেখলে অস্ট্রেলিয়ান পেসাররাও দাঁত-নখ বের করতে পারবে না। অজিদের ব্যাকফুটে ঠেলার জন্য রোহিতকে ওপেন করতে হবে।

একাদশ নির্বাচন কতটা সঠিক হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করবে ম্যাচের ফলাফল। গত ম্যাচে বুমরা-সিরাজের সঙ্গে খেলেছেন হর্ষিত রানা। প্রচার রয়েছে গৌতম গম্ভীর কানেকশনের জন্যই নাকি অ্যাডিলেড টেস্টে সুযোগ পেয়েছিলেন। উইকেটহীন রানা ডাগ আউটে থাকবেন? সম্ভবনা কিন্তু প্রবল। তা হলে তাঁর পরিবর্ত কে হতে পারেন? বাংলার আকাশ দীপকে কি গাব্বায় খেলানো হবে? নাকি রানাকে রেখে চার পেসারে যাবে ভারত? নাকি তিন পেসার এক স্পিনার খেলাবে? সেক্ষেত্রে আবার অন্য অঙ্ক কাজ করবে। একমাত্র স্পিনার হিসেবে অশ্বিনকে খেলানো হবে, নাকি ওয়াশিংটন সুন্দরকে? বোলিং ভারসাম্যের উপর কিন্তু গাব্বায় জেতা-হারা নির্ভর করছে ভারতের।

একইসঙ্গে রোহিতের ক্যাপ্টেন্সি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজে এ নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। অ্যাডিলেডেও আর একবার উঠে পড়েছে সেই অস্বস্তিকর আলোচনা। দ্বিতীয় ইনিংসের দ্বিতীয় সেশনে বুমরাকে মাত্র ৪ ওভার বল করিয়েছিলেন। উইকেটও নিয়েছিলেন বুমরা। আরও বল কেন করানো হল না, তা নিয়ে সমালোচনা চলছে। রোহিত যদি নিজেকে আবার স্বমহিমায় ফিরে পেতে চান, গাব্বা টেস্টে খুচরো ভুল করলে চলবে না। বরং পাল্টা দেওয়ার জন্য চমকপ্রদ ক্যাপ্টেন্সি তুলে ধরতে হবে তাঁকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen + eighteen =