কলকাতা: গ্রেপ্তার করা হয়েছে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে। নওশাদ সিদ্দিকির ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ব্যবসায়ী শেখ শামসুর আলমকে সম্প্রতি তলব করে লালবাজার। ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি এবং অফিসে কলকাতা পুলিশ তল্লাশি চালায় বলে সূত্রের খবর। এই মামলার শুনানিতে এবার পুলিশের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন হাই কোর্টের বিচারপতি।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। শুক্রবার মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি মান্থা মন্তব্য করেন, ‘এটা তো বিস্ময়ের। ১৬০ ধারায় নোটিস দিয়ে পুলিশ ডাকছে। সাধারণভাবে ফরেন্সিক রিপোর্টে দেরি হলে এরকম হয়।’ সেই সঙ্গে বিচারপতি স্পষ্ট করে দেন,আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি ঘনিষ্ঠ স্বর্ণ ব্যবসায়ী শেখ শামসুর আলম ভার্চুয়ালি হাজিরা দেবেন পুলিশের সামনে। জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য আগামী শুনানিতে রিপোর্ট দিয়ে জানাবে পুলিশ। কোনও নথির দরকার হলে ৭২ ঘণ্টা আগে নোটিস দেবে পুলিশ। তবে এখনই কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না। দু’ সপ্তাহ পরে রিপোর্ট দিতে হবে পুলিশকে।
ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ব্যবসায়ী শেখ শামসুর আলমকে সম্প্রতি তলব করে লালবাজার। ব্যবসায়ী প্রথম থেকেই দাবি করেন তিনি নওশাদের সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নন। তিনি নওশাদের শুধুই পরিচিত। আর সে কারণেই তাঁকে তলব বলে দাবি করেন তিনি। এরপরই আদালতের দ্বারস্থও হন তিনি। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে যান তিনি। বিচারপতি ১৬০ ধারায় নোটিস দেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন তুললে এজি বলেন, ‘এখানে মোবাইলের রিপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে ডাকা হয়েছে।’ পাল্টা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘নওশাদের মোবাইল ফোন থেকে নাম পাওয়া গিয়েছে। কলকাতা থেকে পুলিশ চেন্নাই গিয়ে নোটিস দিয়ে আসে। তল্লাশি করে। চারটে মামলা করা হয়েছে হেনস্থার জন্য।’ এরপরই বিচারপতি মান্থা প্রশ্ন করেন, ‘পুলিশ কেন নিজে ১৬০ ধারায় নোটিস পাঠাল, তাও নিজে গিয়েই। এটাই প্রশ্ন। আপনারা আগে তথ্য প্রমাণ জোগাড় করুন। ৭২ ঘণ্টা আগে নোটিস দিয়ে জানাবেন ভিডিয়ো কনফারেন্সে আসার জন্য।’
প্রসঙ্গত, রানি রাসমণি রোডে আইএসএফের কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় গত ২১ জানুয়ারি। সেই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে। আপাতত জেল হেপাজতে রয়েছেন তিনি। এদিকে এই মামলায় বিস্ফোরক অভিযোগ ওঠে। নওশাদের মোবাইল ফোন থেকে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের বেশ কিছু চ্যাট পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যায়। এই চ্যাট হাওয়ালা যোগের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করে বলেও দাবি করা হয়।