কলকাতা: স্কুলের জামায় বিশ্ববাংলার লোগো থাকবে নির্দেশিকা জারি হতেই এ নিয়ে আপত্তি তোলে একাধিক সংগঠন। প্রশ্ন ওঠে, স্কুলের পোশাকে ব্যাজ বা স্কুলের লোগা না থেকে বিশ্ব বাংলার লোগো থাকবে কেন? স্কুলের ইউনিফর্মে সরকারি লোগোর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। সেই মামলায় রাজ্যের কাছে হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী দু’ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য হলফনামা দেবে। মামলাকারী তার এক সপ্তাহের মধ্যে জবাবি হলফনামা দেবে। তিন সপ্তাহ পর মামলার শুনানি হবে। রাজ্যের সব সরকারি স্কুলে এবার থেকে একই রঙের ইউনিফর্ম থাকবে। নীল–সাদা ইউনিফর্মে থাকবে বিশ্ববাংলা লোগো। এমনই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। সেখানে বলা হয় সরকারি স্কুলে নীল সাদা ইউনিফর্ম করতে হবে। সেই সঙ্গে শার্ট ও কামিজে বসানো থাকবে বিশ্ব বাংলার লোগো। এই নির্দেশ ঘিরে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক।অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্ট’স ফেডারেশন (AISF) এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টে যায়। একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে তারা প্রশ্ন তোলে স্কুলের জামায় বিশ্ব বাংলার লোগো কেন ব্যবহার করা হবে?
এআইএসএফের দাবি, বিশ্ব বাংলার লোগো রাজ্যের হস্তশিল্প, বস্ত্রশিল্পের ক্ষেত্রকে তুলে ধরার জন্য প্রচারমূলক হিসাবে ব্যবহার করা হয়। স্কুল পড়ুয়াদের জামায় কেন তার ব্যবহার করা হবে? বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এই নিয়ে সরব হন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘এটা সরাসরি স্কুলের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা। স্কুলের পোশাক নীল সাদা হতে পারে, গেরুয়া সাদা হতে পারে কিংবা সবুজ সাদা হতে পারে। সেটাই বহাল রাখতে হবে। এটা কেন্দ্রের সমগ্র শিক্ষা মিশনের টাকা।’ যদিও তৃণমূল নেতা তাপস রায় এ প্রসঙ্গে বলেন, “শুভেন্দু অনেক কিছুই বলে। ওর কথায় কিছু আসে যায় না। একটা সরকারি সিদ্ধান্ত, সেটা কার্যকর পড়ুয়া আর অভিভাবকরা করবেন।’যদিও এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টতই জানিয়েছিলেন, ‘লোগোটা আমি তৈরি করেছিলাম। আমিই সরকারকে দিয়েছি। তার জন্য কোনও টাকা নিইনি। সরকারি স্কুলে সরকারের লোগো থাকলে সমস্যাটা কোথায়? আর এটা তো প্রাইভেট স্কুলের জন্য নয়। যেখানে আমরা বিনা পয়সায় ড্রেস দিই, জুতো দিই। তাদের একটা সরকারের লোগো থাকবে না? জামা প্যান্টটা পাচ্ছে কোথা থেকে তারা? তারা তো বিশ্ব জুড়ে বাংলার নামটা বলবে, গর্ব করবে..এটা তো বাংলার ব্র্যান্ড।’