এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত নাম উমরান মালিক। যেভাবে উল্কার মতো তার উত্থান অবাক করেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী এই মুহূর্তে তার ভক্ত। এক আইপিএল দিয়েই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে গেছেন ভারতের পেস তারকা উমরান মালিক। যুদ্ধবিধ্বস্ত কাশ্মীরের এক ফল বিক্রেতার ঘরে জন্ম হয়েছিল উমরানের। গত আইপিএলে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। সুযোগ পেয়েছেন ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে। ছেলের এমন অর্জনের পরও নিজের ফলের ব্যবসা ছাড়বেন না উমরানের গর্বিত বাবা আব্দুল রশিদ মালিক। নিয়মিত ১৫০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বোলিং করে যাওয়া উমরান বলেছেন, ৭০ বছর ধরে এটা আমাদের পারিবারিক ব্যবসা।
আমার দাদা, বাবা, চাচারা এই কাজ করে আসছেন বছরের পর বছর। আমি ভারতের হয়ে খেলছি মানে এই নয় যে আমার বাবা কাজ করা বাদ দেবেন। বাবা আমাকে সব সময় বলেন, আমরা যেখান থেকে উঠেছি, সব সময় সেখানেই থাকব। আমি খুবই সাধারণ পরিবারের সন্তান। তবে আমি খুবই খুশি যে বাবাকে গর্বিত করতে পেরেছি।
শুধু বাবা নন, ফাস্ট বোলার হয়ে ওঠার পথে মায়ের অবদানের কথাও স্মরণ করেছেন ২২ বছর বয়সী উমরান। ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলতে গিয়ে জানালার কাচ ভেঙে ফেললেও উমরানের মা ছেলেকে বকা দিতেন না। উমরানের ভাষায়, ছেলেবেলা থেকেই ফাস্ট বোলিং করতে ভাল লাগে আমার। যখন ছোট ছিলাম, বাড়িতে প্লাস্টিকের বল নিয়ে ক্রিকেট খেলতাম।
তখন জানালার কাচ ভেঙে ফেললে অনেকেই বকা দিতেন। কিন্তু মা তখনো খেলা বন্ধ করতে বলেননি। বরং বলতেন, খেল, ভেঙে ফেল’! আজ রাহুল দ্রাবিড় থেকে শুরু করে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করে নিছেন। গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ পাচ্ছেন। সীমান্তের ওপারে পাকিস্তানেও তাকে নিয়ে চর্চা তুঙ্গে।
উমরান অবশ্য এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তা করতে নারাজ। তার ফোকাস দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে কটি ম্যাচে সুযোগ পাবেন জানেন না। কিন্তু নিজের সবকিছু উজাড় করে দিতে তৈরি জম্মু এক্সপ্রেস। তবে ফল বিক্রেতা বাবার ওপর অভিমান নেই উমরান মালিকের। এই ফলের দোকান তাকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করেছে। হাতে পয়সা এসে গেলেও নিজের পুরনো দিন ভুলতে পারবেন না উমরান।