নিয়োগ দুর্নীতিতে নয়া তথ্য, ওএমআর শিটে উত্তর বদলানো হয়েছে হোয়াইটনার দিয়ে

ওএমআর শিটে উত্তর বদলানো হয়েছে হোয়াইটনার ব্যবহার করে। তদন্তে এমনই ঘটনা সামনে এসেছে বলে জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। গত ২০১৬-র ২৭ নভেম্বর এসএসসির যে নিয়োগ পরীক্ষায় বসেন প্রর্থীরা তাঁদের একজনের ওএমআর শিটে হোয়াইটনার ব্যবহার করে কিছু উত্তরে বদলানো হয়েছে বলে অভিযোগ।ওই পরীক্ষার ওএমআর শিট যাচাইয়ের দায়িত্ব ছিল গাজিয়াবাদের একটি সংস্থার।আদালতের নির্দেশে তদন্তে নেমে সেই সংস্থার হার্ডডিস্ক থেকেই নবম-দ্বাদশে শিক্ষক, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে শিক্ষাকর্মী নিয়োগে ওএমআর শিটের নমুনা সংগ্রহ করে সিবিআই। সেখানেই নজরে আসে, ৮,১৬৩ জনের ক্ষেত্রে হার্ডডিস্কে পাওয়া ওএমআর শিট এবং এসএসসি-র হেফাজতে থাকা ওএমআরে গরমিল রয়েছে।অনেক চাকরিপ্রার্থী প্রশ্নের উত্তর না-দিয়ে ফাঁকা শিট জমা দিলেও পরে সেগুলি ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে নবম-দশমে ৯৫২ জন প্রার্থীর ক্ষেত্রে এই দু’টি ওএমআর শিটই আপলোড করেছে এসএসসি।এরই পাশাপাশি ২০১৬-র পরীক্ষায় নবম-দশমে প্যানেলভুক্ত ও ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের ওএমআর শিটও এসএসসি আপলোড করে এসএসসি সেখানেও ওই প্রার্থীর ওএমআরে হোয়াইটনার ব্যবহারের নমুনা উঠে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে,  ওএমআর শিটটিতে একাধিক ভুল উত্তর যেমন ১২, ২৬, ২৯,৩১, ৩৩-এর উত্তর হোয়াইটনারের সাদা কালিতে মুছে, ঠিক উত্তর দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ওএমআরে নীল বা কালো কালির বল পয়েন্ট পেন ছাড়া কিছু ব্যবহার করা যাবে না।এছড়াও প্রার্থীর রোল নম্বরের জায়গাতেও হোয়াইটনার ব্যবহার হয়েছে। অথচ রাজ্য সরকারের সার্ভিস রুল অনুযায়ী, কোনও সরকারি নথির কোনও অংশ হোয়াইটনার দিয়ে মোছার কথা নয়।

এদিকে  এই ঘটনায় এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানান, ‘ওএমআর শিট স্ক্যান করার ক্ষেত্রে কম্পিউটারে কোনও অসুবিধা না হলে বা সংশ্লিষ্ট তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার তরফে অভিযোগ না উঠলে, তা বাতিল হয় না। এই ওএমআর শিট যখন এসএসসি-র ওয়েবসাইটে আছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তার মানে স্ক্যান করেই এর মূল্যায়ন হয়েছিল।’ তাঁর সংযোজন, ‘এই পরীক্ষা ও উত্তরপত্র যখন মূল্যায়ন হয়, তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না।’

প্রসঙ্গত, এসএসসির মাধ্যমে স্কুলে নিয়োগ-দুর্নীতির তদন্তে নেমে গাজিয়াবাদ থেকে সিবিআই যে হার্ডডিস্ক উদ্ধার করেছিল, তাতে ৮,১৬৩ জন প্রার্থীর ওএমআর শিটে জালিয়াতির প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ মিলেছে।এঁদের মধ্যে নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগে ৯৫২ জনের ওএমআর শিটে গরমিল রয়েছে বলে কলকাতা হাই কোর্টে জানানো হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে। এরপর আদালতের নির্দেশে সেই তালিকা নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি। কিন্তু তার বাইরেও ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিটে জালিয়াতি হয়েছে কি না সে প্রশ্ন ওঠে। সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা এক প্রার্থীর ওএমআর শিটের সূত্রে এই সংশয় আরও জোরালো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 1 =