১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রের কাছ থেকে সব থেকে বেশি টাকা পাওনা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। অবশেষে সংসদে তা স্বীকার করে নিল কেন্দ্র। লোকসভায় দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী স্বাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি যে পরিসংখ্যান তুলে ধরেন, সেখানে দেখা যাচ্ছে ১০০ দিনের কাজের মজুরি বাবদ কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বকেয়া ২৭৪৪ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা। চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের বকেয়া এই বিপুল পরিমাণ টাকা, দেশের মধ্যে সর্বাধিক। যেখানে বিজেপি-শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশের বকেয়া ৫২ কোটি ৪৮ লক্ষ। হরিয়ানার বকেয়া মাত্র ৮ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা, মধ্যপ্রদেশের বকেয়া ৮৩ কোটি ৩২ লক্ষ এবং অসমের বকেয়া ১৯৬ কোটি টাকা। এদিকে কেন্দ্র লিখিত ভাবে জানিয়েছে যে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে নতুন যন্ত্রপাতি কেনার জন্য শ্রমিকদের যে কেন্দ্রীয় সাহায্য করার কথা জানানো হয়েছিল, সেই খাতে কেন্দ্রের কাছে পশ্চিমবঙ্গের পাওনা ৪৫৭ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, ১০০ দিনের কাজের মজুরি বাবদ প্রাপ্য টাকা মেটানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও লেখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্তু দিনের পর দিন দিল্লিতে দরবার করেও কাজ হচ্ছে না বলে রাজধানী দিল্লিতে দাঁড়িয়েই সরব হতে দেখা যায় মমতাকে। সেই সময়েই আবার রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী দাবি করেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং নিজে তাঁকে ফোন করে বকেটা মেটানো নিয়ে আলোচনা করেন। এরপরও কেন্দ্রেরই দেওয়া পরিসংখ্যানে এটা স্পষ্ট হল, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের বকেয়ার ফারাক অনেকটাই।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসেরই অপর সাংসদ দীপক অধিকারী অর্থাৎ দেব-এর একটি প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র যে তথ্য তুলে ধরে, তাতে আরও একবার বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার ছবিই সামনে এসেছে। কারণ, দেবের লিখিত প্রশ্ন ছিল, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে বছরে ৬ হাজার টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের কতজন কৃষক উপকৃত হয়েছেন তা নিয়ে। এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর লোকসভায় দাবি করেন, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এপ্রিল-জুলাই সময়ের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৪৬,৭৮,৪০৭ জন এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অনুদান পেয়েছেন৷ ওই একই সময়ে বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশে কেন্দ্রীয় অনুদান পেয়েছেন ২ কোটি ৪০ লক্ষ কৃষক, মধ্যপ্রদেশে ৮৩ লক্ষ, গুজরাতে ৫৮ লক্ষ ৭৪ হাজার কৃষক।