দুর্গাপুজোয় এই বছর অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিদ্যুতের বিলের ওপরেও অনেকটাই ছাড় দেওয়া ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই গোটা বিষয়টির জন্য প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা খরচ হবে রাজ্যের অর্থভাণ্ডার থেকে। এক্ষেত্রে প্রায় ২৮০ কোটি টাকা সরাসরি ৪০ হাজার পুজো কমিটির অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। এই ৪০ হাজার পুজো কমিটির মধ্যে ৩ হাজার কলকাতায়, বাকি জেলায়। বিদ্যুতে ভর্তুকি ও সরকারি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আরও ৭০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। সব মিলিয়ে খরচ হবে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। যদিও পুজো কমিটিগুলিকে অনুদানের জন্য রাজ্য সরকারের এই বিপুল পরিমান খরচ যুক্তিযুক্ত কি না তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ চন্দ্রযান ৩-এর খরচ ৬১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলির জন্য যে টাকা খরচ করছে তা চন্দ্রযান ৩-এর খরচের প্রায় ৫৭ শতাংশ। তবে রাজ্য সরকারের এই অনুদানের নেপথ্যে অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুজো শুধু একটি উৎসব নয়, এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বহু মানুষের রোজগার যুক্ত রয়েছে। প্রতিবছর এই উৎসবে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়।’
এদিকে রাজ্য সরকারের এই অনুদান অবশ্য গ্রহণ করেননি কলকাতা পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর তথা সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার পুজো কমিটির প্রধান উদ্যোক্তা সজল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘এই অনুদান চালুর আগেও খুবই ধুমধামের সঙ্গে পুজোর আয়োজন করা হত। এই বছরও তেমনটাই হবে। তাই আমরা রাজ্যের কোষাগারের এই সর্বনাশের শরিক হতে চাই না, তাও আবার এমন সময়, যখন রাজ্য সরকার উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ খরচ করতে পারছে না। শূন্যপদে নিয়োগ করতে পারছে না, সরকারি কর্মীদের ডিএ দিতে পারছে না।’
এদিকে কলকাতারই অপর এক বিগ বাজেট পুজো শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব। এই ক্লাবের দুর্গাপুজো কমিটির কর্ণধার তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু জানান, রাজ্য সরকারের এই অনুদানকে তিনি সম্মান হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, ‘বিগ বাজেটের পুজোগুলোর ক্ষেত্রে এই অর্থ সামান্য। তবুও এটাকে আমরা সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করি।’ সরকারে এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে খুঁত খুঁজতে যাওয়া অর্থহীন বলেই মনে করেন তিনি।