ভয়াবহ দুর্ঘটনা বর্ধমান স্টেশনে। দিনের ব্যস্ত সময়ে জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল ৩ জনের। আহত কমপক্ষে ২৭ জন। বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ বর্ধমান স্টেশনের ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রেনের অপেক্ষায় বসেছিলেন যাত্রীরা। আচমকাই প্রচণ্ড শব্দ। আর তারপরেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে জলের ট্যাঙ্ক।
২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ভেঙে পড়েছিল বর্ধমান স্টেশনের একাংশ। তিন বছরের মাথায় ফের দুর্ঘটনা। এদিন বিকট শব্দ শুনে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন যাত্রীরা। ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে বিশাল জলের ট্যাঙ্কটি ততক্ষণে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে। তারই আঘাতে ভেঙে পড়েছে স্টেশনের একাংশের শেড।
দুমড়ে মুচড়ে যায় শেডের লোহার পাতি। ভারি লোহার জল ট্যাঙ্কের ভগ্ন অংশ রেল লাইনের উপর ২ নম্বর লাইনের ওপর আছড়ে পড়ে। তার ধাক্কায় লাইনের উপর থাকা বড় বড় পাথর ছিটকে এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসে। ঘটনার আকস্মিকতায় গোটা স্টেশন জুড়ে তুমুল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আর্তনাদ শুনেই তাঁরা বুঝতে পারেন, বেশ কয়েকজন চাপা পড়েছেন ধ্বংসস্তূপের নীচে। তাঁদের উদ্ধারের জন্য শুরু হয় ছোটাছুটি। ততক্ষণে আরপিএফ ও জিআরপিও ছুটে এসে উদ্ধার কাজে হাত লাগায়। এ পর্যন্ত প্রায় ২৭ জনকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। আরও বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে জোর কদমে কাজ করছেন আরপিএফ, জিআরপি, বর্ধমান থানার পুলিশ, রেলের আধিকারিক সহ রেলের ইঞ্জিনিয়াররা। এই মুহূর্তে এক ও দু নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়ে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ন বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে সকলে।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি। আমরা ওখানেই যাচ্ছি। কী করে ঘটল তা এখনও পরিষ্কার নয়। আহতদের দ্রুত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করানো হয়েছে।’ তিনি অবশ্য মৃত্যুর কথা স্বীকার করেননি। সরকারিভাবে তাঁর কাছে এ ব্যাপারে তথ্য নেই বলেই জানিয়েছেন।