একটা সময় তাঁর দাপটে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব কেঁপেছে। সময়ের সীমারেখা পেরিয়ে সর্বকালীন সেরা পেসারদের মধ্যে প্রথম সারিতে নাম তুলে ফেলেছেন তিনি। সেই ওয়াসিম আক্রম নাকি অবসরের পরই মারাত্মকভাবে কোকেনে আসক্ত হয়ে পড়েন। নিজের আত্মজীবনীতে এমনটাই জানিয়েছেন সুইংয়ের সুলতান।
শীঘ্রই প্রকাশিত হবে আক্রমের আত্মজীবনী ‘সুলতান, এ মেময়র’ । সেই বইয়ে কোকেন নিয়ে তাঁর আসক্তি এবং তার ভয়াবহতা নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন আক্রম। বইপ্রকাশের আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, কোকেনের আসক্তি একটা সময় তাঁর জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল। ২০০৩ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর টিভিতে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজ করছিলেন আক্রম। সেসময়ই তিনি মাদকে আসক্ত হয়ে যান। তাঁর প্রথম স্ত্রী হুমার প্রতি অবহেলার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই কোকেন। আক্রম জানিয়েছেন, প্রথম স্ত্রী হুমা ২০০৯ সালে মারা যাওয়ার পর তিনি কোকেনের সেই নেশা পরিত্যাগ করেছেন।
কিংবদন্তি ওই পেসার জানিয়েছেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় খ্যাতির সংস্কৃতি সবটা গ্রাস করে নেয়। এটা অবাধ্যতার প্রলোভন দেয়। তুমি এখানে একরাতে ১০টা পার্টিতে যেতে পার। অনেকে যায়ও।’ আক্রম নিজেও প্রচুর পার্টিতে যেতেন। কিংবদন্তি পাক পেসারের স্বীকারোক্তি, ইংল্যান্ডে থাকাকালীন কোনও এক পার্টিতে প্রথম তাঁকে কোকেন নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারপর ধীরে ধীরে তিনি মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। একটা সময় মনে হত এটা ছাড়া চলছে না। আক্রম বলছেন, “সেসময় আমি ঘুমোতে পারতান না, খেতে পারতাম না। ডায়াবেটিসের প্রতি অমনোযোগী হয়ে পড়েছিলাম। খিটখিটে মেজাজের হয়ে যাচ্ছিলাম।”
সুইংয়ের সুলতান স্বীকার করেছেন, কোকেনের জন্যই স্ত্রী হুমার সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। ‘হুমা সেসময় ভীষণ একা বোধ করত। করাচিতে ফিরতে চাইত।’ বলছিলেন আক্রম। একদিন তাঁর মানিব্যাগে কোকেন মেলায় হুমা সবটা জানতে পারেন বলেও জানিয়েছেন কিংবদন্তি পেসার। প্রথম স্ত্রী সবটা জানার পর তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসনে বলেও জানিয়েছেন আক্রম। কিন্তু ২০০৯ সালে বিরল রোগে আক্রান্ত হয় হুমা প্রয়াত হন। আক্রম জানিয়েছেন, হুমার প্রয়াণ তাঁকে এতটা নাড়িয়ে দেয় যে ধীরে ধীরে তিনি নেশার অন্ধকার জীবন থেকে বেরিয়ে আসেন।