পৌষের শেষ, মাঘ এখনও বাকি। তবে ২০২৩-এর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় অন্য়ান্যবারের তুলনায় ৫১ বছরে এবারে বেশ উষ্ণ পৌষ সংক্রান্তি। তবে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, গঙ্গাসাগরে শনি এবং রবিবার মকর সংক্রান্তির দিন ভোররাতে ও সকালের দিকে ঘন কুয়াশা হতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক বা তার ওপরে থাকবে। তবে মাঘের শুরুতে আবার জানান দেবে শীত। তবে মাঘের শুরুতেই পারদ ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হবে। তবে সংক্রান্তি উষ্ণ হলেও একেবারে শীতের আমেজ যে নেই তাও নয়।
এদিকে কলকাতায় শনিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হঠাৎ-ই অনেকটা বৃদ্ধি পেয়ে পৌঁছে গেছে ১৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শুক্রবারে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ঘোরাফেরা করেছে ৫৪ থেকে ৯৪ শতাংশের মধ্যে। এদিন কলকাতায় সকালে দেখা গেছে হালকা কুয়াশা। পরে দিনভর আংশিক মেঘলা আকাশের পূর্বাভাস দেওয়া হয় আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের থেকে। তবে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। সকালে সন্ধ্যায় শীতের আমেজ থাকলেও দিনের বেলায় তা উধাও। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ ঘন্টা এরকমই থাকবে তাপমাত্রা। সোমবার থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে নামবে। জাঁকিয়ে শীতের পরিস্থিতি আপাতত ফিরছে না। তবে শীতের আমেজ থাকবে আগামী সপ্তাহে। এদিকে হালকা বৃষ্টি হবে দার্জিলিং, কালিম্পং-এ। ঘন কুয়াশার সতর্কতা বেশ কয়েকটি জেলায়। একইসঙ্গে এও জানানো হয়েছে, উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই আগামী ৪৮ ঘন্টায় ঘন কুয়াশার পূর্বাভাস। মালদা উত্তর দক্ষিণ দিনাজপুর কোচবিহারে বেশি কুয়াশার সম্ভাবনা। দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা ও হাওড়া এবং দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুরে সকালের দিকে ঘন কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়েছে আবহাওযা দপ্তর থেকে। মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা হতে পারে মুর্শিদাবাদেও।
মকর সংক্রান্তির আবহেই এবার বৃষ্টির পূর্বাভাসও দিল আবহাওয়া দপ্তর। আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর, বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে একটি উচ্চচাপ বলয় তৈরি হয়েছে। সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প প্রবেশ করছে বাংলার উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কলকাতাতেও। আগামী সপ্তাহের শুরু থেকেই ঘন কালো মেঘের দেখা মিলতে পারে বাংলার আকাশে। সর্বাধিক বৃষ্টি হতে পারে বুধবার। তবে মেঘ থাকলে স্বাভাবিক নিয়মেই তাপমাত্রার বড় সড় পারাপতন দেখতে পাওয়া যাবে না। এদিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং সহ উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। আগামী দু-তিন দিন এই হালকা বৃষ্টি চলবে। তবে সোমবার পর্যন্ত রাজ্যের অন্য কোথাও আর বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই।
এদিকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সরছে উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে। ভারত হয়ে পাস হবে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। এর প্রভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তন দেশজুড়ে। রাজধানী দিল্লি থেকে পঞ্জাব, চণ্ডীগড়, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহারে ঘন কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যার জেরে দৃশ্যমানতা শূন্যতে নেমে আসতে পারে। আগামী ৪ থেকে ৫ দিন এই ঘন কুয়াশার চাদর থাকবে দেশের বেশিরভাগ অংশে। বিক্ষিপ্ত ঘন কুয়াশা কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা থাকবে বাংলা, সিকিম, অসম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরাতে।
এদিকে আবহাওয়া দপ্তর থেকে আরও জানানো হয়েছে, সোমবার থেকে শীতল দিন ও শৈত্য প্রবাহের সম্ভাবনা থাকছে পঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, দিল্লি, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, উত্তর প্রদেশ এবং রাজস্থানের কিছু অংশে। বিহারে শীতল দিনের পরিস্থিতি থাকবে। মধ্য ভারতের বেশ কিছু রাজ্যেও শৈত্য প্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে বলেই জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর। তবে আগামী সপ্তাহে গ্রাউন্ড ফ্রাস্ট সিচুয়েশন হবে রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশের কিছু অংশে।