কাল দেশের ১৩ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৮৮ আসনে ভোটগ্রহণ। এই পর্বেই ভোট এরাজ্যের তিন কেন্দ্র দার্জিলিং, বালুরঘাট, রায়গঞ্জে। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। এই পর্বেই ভোট এরাজ্যের তিন কেন্দ্র দার্জিলিং, বালুরঘাট, রায়গঞ্জে। তিনটি কেন্দ্রই ২০১৯-এ বিজেপির দখলে ছিল। নিজেদের গড় ধরে রাখার লড়াই বিজেপির সামনে। দ্বিতীয় দফার ভোটে ভাগ্য পরীক্ষা উত্তরবঙ্গের তিনটি লোকসভা আসনে। রায়গঞ্জ বালুরঘাটের সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ে সামিল দার্জিলিংও। যেখানে মূল লড়াই বিজেপির রাজু বিস্তার সঙ্গে তৃণমূলের গোপাল লামা এবং কংগ্রেসের মুনিশ তামাং- এর। এছাড়াও বালুরঘাটে হেভিওয়েট বিজেপির সুকান্ত মজুমদারকে লড়তে হবে তৃণমূলের বিপ্লব মিত্রের সঙ্গে। অন্যদিকে, রায়গঞ্জে ত্রিমুখী, লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছেন তৃণমূলের কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর ,কংগ্রেসের আলি ইমরান রামজ ও বিজেপির কার্তিকচন্দ্র পাল। তবে এঁরা ছাড়াও প্রচুর প্রার্থী রয়েছেন নিজেদের ভাগ্য যাচাই করতে।
বাংলা ছাড়াও অসম (৫), বিহার (৫), ছত্তিশগড় (৩), কর্নাটক (১৪), কেরল (২০), মধ্যপ্রদেশ (৭), রাজস্থান (১৩), ত্রিপুরা (১), উত্তরপ্রদেশ (৮), জম্মু ও কাশ্মীর (১) ও মহারাষ্ট্রে (৮) ভোট কাল। আগের পর্বে মণিপুরের আউটার মণিপুর কেন্দ্রে ভোট হয়েছিল আংশিকভাবে। ওই আউটার মণিপুরের বাকি অংশেও এই পর্বে ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, এই দফায় সুষ্ঠুভাবে ভোট করাতে সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে দ্বিতীয় দফার ভোট কমিশনের জন্য চ্যালেঞ্জিং। কারণ যে রাজ্যগুলিতে ভোট হচ্ছে, তার অধিকাংশেই প্রবল তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিন কেন্দ্রের মধ্যে পার্বত্য দার্জিলিংয়ের ভোট বরাবরই নজরকাড়া। এখানকার তিনটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্র এতটাই দুর্গম জায়গায় যে, সেখানে সরাসরি গাড়ি পৌঁছয় না। কিছুটা গাড়িতে, আবার কিছুটা পায়ে হেঁটে সেখানে যেতে হয় ভোটকর্মীদের। দার্জিলিং বিধানসভার অধীনে থাকা পুলবাজার ব্লকের তিনটি বুথ মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার বাসিন্দা রয়েছেন। ভোটার সংখ্যা ১৪৫৬ জন। এর মধ্যে দারাগাঁও জুনিয়ার হাই স্কুলে ১০৩৪ জন, রাম্মাম ফরেস্ট প্রাইমারি স্কুলে ২০৯ জন এবং আর ৭৫৪৫ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত সাবানদেন ফরেস্ট প্রাথমিক স্কুলের বুথে ভোটার সংখ্যা ২১৫ জন । দার্জিলিং সদর থেকে সংশ্লিষ্ট তিনটি বুথের দূরত্ব ১০৬ কিলোমিটার। জঙ্গলে ঘেরা বুথগুলিতে গাড়িতে পৌঁছনো সম্ভব নয়। বুধবার বিকালে দার্জিলিং গভর্মেন্ট কলেজের ডিসিআরসি থেকে ভোটকর্মীরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে বুথের উদ্দেশে রওনা হন। রাতে শ্রীখোলা গ্রামে পৌঁছন। এদিন তারা পাহাড়ি চড়াই-উৎরাই পার করে নিজেদের ভোট কেন্দ্রে পৌঁছেছেন।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই পর্বে যে যে রাজ্যে ভোট হচ্ছে, তাতে কংগ্রেস, বিজেপি দুই শিবিরেরই নির্বাচন ভাগ্য অনেকাংশে নির্ধারিত হতে পারে। কেরলের সবকটি আসনে ভোট এই পর্বে। এই কেরলে ১৯টি আসনেই আগেরবার জিতেছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট। কর্নাটকের অর্ধেক আসনেও ভোট এদিন। এই কর্নাটকে সদ্যই সরকার গড়েছে কংগ্রেস। সে রাজ্যে আগেরবার ২৮টির মধ্যে ২৬ আসন জিতেছিল বিজেপি জোট। সেই আসন ধরে রাখা বিজেপির জন্য চ্যালেঞ্জ। উত্তরপ্রদেশে এবং বিহারে আগের পর্বে অনেক কম ভোট পড়েছিল, যা চিন্তায় ফেলেছে গেরুয়া শিবিরকে। বিজেপির কাছে চ্যালেঞ্জ এই রাজ্যগুলিতে নিজেদের কোর ভোটারদের বুথমুখী করা। মহারাষ্ট্রে শিবসেনা এবং এনসিপি ভাঙার পর এই প্রথম নির্বাচন। সেরাজ্যেও নজর থাকবে।