কোয়েস্ট মলের মতো সংখ্যালঘু এলাকায় বই স্বাক্ষর অনুষ্ঠান করাতে রাজি নন ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। আর সে কথা তিনি বৃহস্পতিবার একটি টুইটে জানিয়ে লেখেন, ‘কলকাতা অ্যাটেনশন’। ‘আর্বান নক্সাল’ -এর বই স্বাক্ষর কর্মসূচি কোয়েস্ট মল থেকে সাউথ সিটি মলের স্টারমার্ক বুক শপে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে কোয়েস্ট মল সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় অবস্থিত। তাই সেই জায়গাটি আমার জন্য সুরক্ষিত নয়।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘দ্য ট্র্যাজিডি অফ মর্ডান বেঙ্গল।সেই কারণে এই অনুষ্ঠান স্থানান্তরিত করা হল অন্য একটি শপিং মলে।‘ আর তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বঙ্গ রাজনীতি।
বৃহস্পতিবার বিবেকের এই টুইট নজরে আসার পর সরব হয় তৃণমূল।অন্যদিকে, বিরোধী শিবির সমর্থন জানাচ্ছে পরিচালককে। এখানে বঙ্গে বিরোধী শিবির বলতে বিজেপিকেই শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যায়।
বিবেক অগ্নিহোত্রীর মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘ডাহা কুৎসা করা হচ্ছে। সস্তায় জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য এই সমস্ত কথা বলছেন তিনি। কোয়েস্ট মলে পৃথিবীর সমস্ত ধর্মের মানুষ যাচ্ছেন। সমস্ত ধরনের ইভেন্ট হচ্ছে সেখানে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একটি ভ্যেনুকে নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত আপত্তিকর।’
বিবেক অগ্নিহোত্রীকে আক্রমণ করে কুণালের সংযোজন, ‘আগে গুজরাত ফাইলস -টা করুন। আর তা গুজরাতে গিয়েউদ্বোধন করুন। তারপর বড় বড় কথা বলবেন।’
অন্যদিকে, বিবেকের পাশে দাঁড়িয়ে শাসকদলকে বিদ্ধ করতে দেখা যায় রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে। তিনি স্পষ্টতই জানান, ‘আমরা জানি পশ্চিমবঙ্গ ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সর্বধর্ম সমন্বয়ের স্বর্গরাজ্য।’ আর এই প্রসঙ্গেই তিনি প্রশ্ন তোলেন, সেক্ষেত্রে এই বাধাদান কেন তা নিয়েও। এরপরই এর রেশ ধরে শমীক এও বলেন, ‘কারণ পশ্চিমবঙ্গে এখন যে সরকার রয়েছে তারা বিভাজনের রাজনীতি করে। আমরা এভাবে হিন্দু-মুসলমান-হরিজনের নামে সমাজকে বিভক্ত করে দেখতে অভ্যস্ত নই। আমরা মনে করি দেশ একটাই-ভারতবর্ষ। হিন্দু কোনও ধর্মবাচক শব্দ নয়, জাতিবাচক শব্দ। বহুত্ববাদের দেশে এই ধরনের ঘটনা অভিপ্রেত নয়। নিঃসন্দেহে তা সরকারের দুর্বলতা। এই ঘটনায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে প্রশাসনিক আত্মসমর্পণ।’
এদিকে পুরো ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছে কোয়েস্ট মল কর্তৃপক্ষ।