শিশু মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে জেলা হাসপাতালে তাণ্ডব, দীর্ঘক্ষণ বন্ধ জরুরি বিভাগ 

এক শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রবিবার দুপুরে রণক্ষেত্র চেহারা নিল আসানসোল জেলা হাসপাতাল চত্বর। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বিক্ষোভের নামে তাণ্ডব চালায়। বেলা বারোটার পর থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত দফায় দফায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালায় মৃতের পরিবারের সদস্যরা বলে অভিযোগ। চিকিৎসকের সামনে কাঁচের গার্ড ভাঙা হয়। টেবিল চেয়ারের পাশাপাশি ইমারজেন্সি বিভাগের জরুরি ওষুধ ও টিকিট এবং খাতা মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে বেলা বারোটার পর থেকে ইমারজেন্সি বিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত ইমারজেন্সি বিভাগে কোনও রোগী দেখা সম্ভব হয়নি। খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ হাসপাতালে আসে। নামানো হয় কমব্যাট ফোর্স। আসানসোল দক্ষিণ থানার বুধার চমনতলার বাসিন্দা মৃত শিশুর নাম মহঃ সাদ্দাম। একদিকে যখন বকরি ঈদ উপলক্ষে খুশিতে মেতে উঠেছে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা, ঠিক তখন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। জানা গিয়েছে, এদিন সকালে দু’বছরের মহঃ সাদ্দামের জ্বর হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক শিশুটিকে পরীক্ষা করে ওষুধ লিখে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে বাড়িতে তা খাওয়ানোর পর শিশুটি অচৈতন্য হয়ে পড়ে। তখন আবার শিশুটিকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখন চিকিৎসক শিশুটির পরীক্ষা করার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে আসেন ডেপুটি সুপার কঙ্কন রায় ও সহকারী সুপার ভাস্কর হাজরা। পরে আসেন ভারপ্রাপ্ত সুপার ডাঃ শঙ্করী মাজি। আসেন বুধা এলাকার কাউন্সিলর তথা আসানসোল পুরনিগমের মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় ও ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক। মৃত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা আলোচনা পর পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহর ময়নাতদন্তের জন্য রাজি হয়। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মহঃ ইউনিস খান জানিয়েছেন, এক শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শিশুর পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন। কিছু সময়ের জন্য ইমারজেন্সিতে চিকিৎসা পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। তিনি বলেন, গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য তিনজনের একটি কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। তারা তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × five =