‘আর্থিক অনটনে ভুগছি, শচীন সব জানে’, চাকরি খুঁজছেন বিনোদ কাম্বলি

বছর তিরিশ আগের ঘটনা। কেরিয়ারের শুরুর দিকের সাতটি ম্যাচে ৭৯৩ রান তুলে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন মুম্বইয়ের তরুণ বিনোদ কাম্বলি। ১৯৯৩ সালে কোনও ব্যাটার যখন ১১৩.২৯ স্ট্রাইক রেটে টেস্ট ম্যাচে ব্যাটিং করে তখন বোঝাই যায় সেই ব্যাট কতটা ধ্বংসলীলা চালাতে পারে। সেবছর ২২৪ এবং ২২৭ রান ছিল কাম্বলির সেরা স্কোর। ভারতীয় ক্রিকেটের সেই উজ্জ্বলতম তারা একদিন কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন। কেরিয়ারের শুরুটা হয়েছিল সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে। মাস্টার ব্লাস্টারের সফল কেরিয়ারের যে কোনও ক্রিকেটারের কাছে একইসঙ্গে ঈর্ষণীয় এবং শিক্ষণীয়। সচিনের কাছের বন্ধু হয়েও সম্পূর্ণ বিপরীত স্রোতে চলা কাম্বলি এখন চরম আর্থিক সমস্যায় ভুগছেন। পরিবার চালাতে হাতজোড় করে কাজ চাইছেন। বেকারত্ব নিয়ে যুঝতে থাকা কাম্বলি বলছেন, সংসার চালাতে যে কোনও কাজ করতে রাজি আছি। শুধু একটা কাজ দিন!


৫০ বছরের কাম্বলি আপাতত পেনশন হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড থেকে মাসিক ৩০ হাজার টাকা পান। কিন্তু তা দিয়ে সংসার চালানো তাঁর পক্ষে অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে উঠছে। করোনা অতিমারীর আগে তেমন কোনও সমস্যা ছিল না। ২০১৯ সালে টি-টোয়েন্টি মুম্বই লিগে কোচের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। তাছাড়া নেরুলে শচীন তেণ্ডুলকরের মিডলসেক্স গ্লোবাল অ্যাকাডেমিতে মেন্টর হিসেবে তরুণ ক্রিকেটারদেরও প্রশিক্ষণ দিতেন। ফলে আর্থিক মাথাব্যথা তেমন ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে যাতায়াতের সমস্যার জন্য ওই অ্যাকাডেমিতে যাওয়া বন্ধ করে দেন কাম্বলি।

কাম্বলির কথায়, “ভোর ৫টায় উঠে ট্যাক্সিতে ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে যেতাম। খুবই খাটনি হত। তারপর আবার সন্ধেয় বিকেসি-র মাঠে কোচিং করাতাম।” এরপরই যোগ করেন, “আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটার। যার সংসার চলে বিসিসিআইয়ের পেনশনে। তার জন্য আমি বোর্ডের কাছে কৃতজ্ঞ। এই আয় দিয়েই পরিবারের দেখভাল করতে পারে।” কিন্তু বর্তমানে যে হারে দৈনন্দিন জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, তাতে এই অর্থে সংসার চালানো দুঃসহ হয়ে উঠছে। সেই কারণেই নতুন কাজের খোঁজে কাম্বলি। ক্রিকেট সংক্রান্ত কাজই করতে আগ্রহী তিনি। প্রাক্তন অলরাউন্ডার বলছেন, “সাহায্যে জন্য আমি মুম্বই ক্রিকেট মুখাপেক্ষী। এমসিএ-কে জানিয়েছি, সংসার চালানোর জন্য অর্থের প্রয়োজন। কোনও কাজ থাকলে দিতে। আমার জীবনে মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার অনেক অবদান রয়েছে। তাই তারা কোনও কাজ দিয়ে আবারও আমায় সাহায্য করতে পারে কি না, সেই অপেক্ষাতেই রয়েছি। এমসিএ সভাপতিকেও নিজের অবস্থার কথা জানিয়েছি।”

আর তাঁর ছোটবেলার বন্ধু শচীন? তিনি জানেন বন্ধুর এই অনটনের কথা? দেশের হয়ে ১০৪টি ওয়ানডে ও ১৭টি টেস্ট খেলা কাম্বলি জানালেন, “ও (শচীন তেণ্ডুলকর) সব জানে। কিন্তু ওর থেকে কিছু আশা করছি না। ও আমাকে তেণ্ডুলকর মিডলসেক্স গ্লোবাল অ্যাকাডেমিতে কাজ দিয়েছিল। খুব খুশি হয়েছিলাম। ও এখনও আমার ভাল বন্ধু। সবসময় আমার পাশে দাঁড়িয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − seven =