মালদা: আচমকা গঙ্গার ভাঙনে ব্যাপক আতঙ্কে ছড়িয়েছে মানিকচক ব্লকের গোপালপুর এলাকায়। বৃহস্পতিবার ভোরে গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর হুকুমতটোলা গ্রামে প্রায় ১৫ মিটার নদীর পাড় বরাবর গঙ্গার ভাঙন হয়েছে বলে স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আর তারপর থেকেই তীব্র ভাঙনের আতঙ্কে হুকুমতটোলা গ্রামের অনেক পরিবার নিজেদের বাড়ি থেকে আসবাবপত্র সরাতে শুরু করেছেন। যদিও এই ভাঙনের খবর পাওয়ার এদিন জেলা সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি টিম এলাকায় পৌঁছয়। জেলা সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে অস্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধের জন্য দ্রুততার সঙ্গে কাজ করার কথাও জানিয়েছে সেচ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।
হুকুমতটোলা গ্রামের একাংশ বাসিন্দাদের বক্তব্য, এই গ্রামের অনেকটাই অংশ তীব্র ভাঙনের জেরে যে কোনও সময় চলে যেতে পারে গঙ্গা গর্ভে। আতঙ্কে বাড়িঘরের আসবাবপত্র নিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন গ্রামবাসীরা।
সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রামবাসী রফিকুল শেখ, বিনোদ শেখদের বক্তব্য, এর আগেও গঙ্গার ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে অনেক পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিল। পরবর্তীতে আবার নতুন করে নদীর ধারেই কাঁচা ঘর বাড়ি তৈরি করেছিল। কিন্তু এদিন আচমকা ভাঙন হয়েছে। এরকম ভাঙন চলতে থাকলে আবারো অনেক ঘর বাড়ি গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যাবে। এদিকে মানিকচকের ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ভাঙন রোধের কাজে সেচ দপ্তর ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌড়চন্দ্র মণ্ডল।
পাল্টা বিজেপির এই মন্তব্যকে ঘিরে তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের সেচ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, গঙ্গা একটি জাতীয় নদী। আর এই গঙ্গার ভাঙন ঠেকানোর সম্পূর্ণ দায়িত্ব কেন্দ্র সরকারের। আগে এই ভাঙন প্রতিরোধের কাজ কেন্দ্র সরকারের অন্তর্গত ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ করে এসেছে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ মাঝপথে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কেন্দ্র সরকার ভাঙনের জন্য রাজ্যকে কোনও টাকা বরাদ্দ করেনি। কিন্তু রাজ্য সরকার সেচ দপ্তরের মাধ্যমে যেভাবেই হোক ভাঙন ঠেকানোর ক্ষেত্রে তৎপর এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।