নতুন বছরেই শুরু হবে বিদ্যাসাগর সেতুকে নতুন করে সাজানোর পালা। যার জেরে যান চলাচল নিয়ে আগামী দু-তিন মাস ভুগতে হতে পারে কলকাতা, হাওড়া, হুগলির বাসিন্দাদের। কারণ সূত্রে খবর, বিদ্যাসাগর সেতুতে হবে কেবল পরিবর্তনের কাজ। তারই জেরে বছরের প্রথম তিন মাস এমন যান-যন্ত্রণার মুখে পড়তেই পারেন গঙ্গার দুপাড়েব বাসিন্দারা। আপাতত যা খবর মিলছে তাতে এই সময়, একটি লেন দিয়ে ছোট গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস, ট্যাক্সি চলাচলের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে প্রাথমিকভাবে। ফলে ডিসেম্বরের শুরুতে সাঁতরাগাছি ব্রিজ চালু হলেও হুগলি নদীর দুই পাড়ে ট্রাফিক নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের। তবে সাঁতরাগাছি ব্রিজ চালু হওয়ার পরই বিদ্যাসাগর সেতুর যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এদিকে রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, কিছুদিনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক সম্পন্ন হবে। এই বৈঠকে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিবহণ মন্ত্রী সহ কলকাতা ও হাওড়া পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগের আধিকারিকরা। সঙ্গে থাকবেন পোর্ট ট্রাস্ট, হুগলি নদী ব্রিজ কমিশনার্সের আধিকারিকেরাও।
এই মুহূর্তের প্রেক্ষিতে গঙ্গার দু পাড়ের সংযোগ রক্ষায় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছে এই বিদ্যাসাগর সেতু। প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি পারাপার করে এই ব্রিজ দিয়ে। ১৯৯২ সাল থেকে এই ব্রিজ দিয়ে যান চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকেই কলকাতা, হাওড়া সহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয় এই সেতু। সেই কারণে এই সেতু দিয়ে ছোট গাড়ি চলাচল করলেও বড় গাড়ি, পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। আপাতত, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এত পরিমাণ বড় বা মালবাহী গাড়ির চাপ কমানোর জন্য এবার কাজে লাগানো হবে রবীন্দ্র সেতু ও নিবেদিতা সেতুকে। উল্লেখ্য, ৮২৩ মিটার দীর্ঘ বিদ্যাসাগরসেতুটি ভারতে দীর্ঘতম কেবল-সেতু। সেতু নির্মাণের পর থেকে কেটে গেছে প্রায় ২৭ বছর। ফলে সেতু নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত স্টে কেবল, হোল্ডিং ডাউন কেবল, ডেক স্ল্যাব, এক্সপ্যানশন জয়েন্ট প্রভৃতিরও আয়ু ২৫ বছর হয়ে গিয়েছে।সেই কারণেই এখন সেগুলি বদলের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
এদিকে পোস্তা এবং মাঝেরহাট ব্রিজ দুর্ঘটনার পর থেকেই শহরের বেশিরভাগ ব্রিজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরজমিনে খতিয়ে দেখতে শুরু করে রাজ্য প্রশাসন। ২০২১-এর ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই বিদ্যাসাগর সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছিল।এর আগে সেতুর দুদিকের জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার বিশেষজ্ঞরা ১৮ টি কেবল বদলের কাজের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন। যা শুরু হওযার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ২০২৩-এর শুরুতেই।