নয়াদিল্লি : রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখার কারণে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, আজ ৭ আগস্ট থেকে ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ প্রাথমিক শুল্ক কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই ট্রাম্প অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক সংক্রান্ত এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। ৩০ জুলাই আমেরিকা ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা দেয়, যা আজ থেকে কার্যকর হয়েছে। বুধবার ঘোষিত অতিরিক্ত শুল্ক ২৭ আগস্ট থেকে প্রযোজ্য হবে।
হোয়াইট হাউসের তরফ থেকে বুধবার জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, ভারত বর্তমানে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে, সেই কারণে আমেরিকায় প্রবেশ করা ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভারত এই অতিরিক্ত শুল্কের ঘোষণাকে “দুর্ভাগ্যজনক” বলে মন্তব্য করেছে এবং বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকা ইচ্ছাকৃতভাবে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানিকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। এসব বিষয়ে ভারত ইতিমধ্যেই নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, ভারতের আমদানি বাজারের পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল এবং এর উদ্দেশ্য হলো ১৪০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমেরিকার এই পদক্ষেপকে “অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অপ্রয়োজনীয়” বলে আখ্যায়িত করে ভারত জানিয়েছে, জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর, ব্রাজিলের সঙ্গে ভারত এখন আমেরিকার সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপিত দেশ হয়ে উঠেছে। আমেরিকা উভয় দেশের ওপরই ৫০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার ওপর ৩৬ শতাংশ করে, বাংলাদেশে ৩৫ শতাংশ, চীন ও শ্রীলঙ্কার ওপর ৩০ শতাংশ করে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে বিশেষ করে বস্ত্র, সামুদ্রিক পণ্য, রত্ন ও গয়না শিল্প সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর তুলনায় কম শুল্ক থাকায় আমেরিকান বাজারে ভারতীয় পণ্য পিছিয়ে পড়তে পারে।
তবে আমেরিকা ওষুধ, ইলেকট্রনিক পণ্য যেমন কম্পিউটার, ট্যাবলেট ও স্মার্টফোন এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজের ওপর এই উচ্চ শুল্ক প্রয়োগ করেনি।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অতিরিক্ত শুল্ক ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও, তার ঠিক দু’দিন আগে — ২৫ আগস্ট — ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির আলোচনার জন্য আমেরিকান আলোচক দল ভারতে আসার কথা রয়েছে।

