হাওড়া: পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলের কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠছে। একাধিক এলাকাতে বোমাবাজি থেকে শুরু করে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতেও বাধা সৃষ্টি করছে শাসক দল এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের উল্লাসের ছবি উঠে এল হাওড়া জেলাতে। হাওড়ার ধূলাগড়ি পঞ্চায়েতের ১১৯ নম্বর বুথে বিরোধী দল প্রার্থী না দিতে পারায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী নিজেকেই জয়ী ঘোষণা করেন। হাওড়ার ওই এলাকার শাসক দল একে উন্নয়নের জয় বলে দাবি করলেও, ওই পঞ্চায়েত এলাকাতে মনোনয়ন দিতে না পারার জন্য শাসকদলের সন্ত্রাসকেই দায়ী করেছে বাম, বিজেপি সহ কংগ্রেস।
১১৯ নন্বর বুথে জয়ী প্রার্থী সাহানারা মিদ্দের স্বামী সিরাজ মিদ্দে দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী এই বুথে শাসক দলের প্রার্থী ছিলেন। তিনি এত ভালো প্রার্থী বলে তাঁর বিরুদ্ধে অন্য দলের কেউ দাঁড়াতে চান ৃনি। তিনি এর জন্য গ্রামবাসীদের ও মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি জানান ওই বুথে ৪৭৫ জন ভোটার রয়েছে। তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো মনোনয়ন জমা না পড়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় এসেছে তৃণমূলের।
তবে এই অদ্ভূত যুক্তি উড়িয়ে তৃণমূলের বেনজির সন্ত্রাস ও আতঙ্কের বাতাবরনকেই দায়ী করছে বিরোধী দলগুলো। সিপিএমের স্থানীয় নেতা নন্দদুলাল মুখোপাধ্যায় জানান, নির্বাচনে কোনো রোবট নয় মানুষ প্রার্থী হয়। বিরোধীদের যে প্রার্থী হবে তার উপরে পুলিশের মিথ্যা মামলা ও তার বাড়িতে হামলা চালাবে শাসক দল। প্রার্থী হয়ে কেউ বাড়ি ছাড়া হতে চায় না। কারও বাড়ি ভেঙে মাঠ করে দিলে তার দায়িত্ব কে নেবে? পাশাপাশি ধুলাগড়ি এলাকাতে পুলিশ কার্যত দর্শক হয়ে আছে বলেই দাবি করেন তিনি।
যদিও বুধবারে ধূলাগোড়িতে বিজেপি প্রাার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ানোর সময় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। তিনি জানান,এখানে মনোনয়ন প্রক্রিয়া চলছে। অন্যান্য এলাকার মত অশান্তি হয়নি। তিনি দাবি করেন বিরোধী দলের যারা মনোনয়ন জমা দিতে পারছেন না আদালতের নির্দেশ মতো এসডিওর তত্ত্বাবধানে রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়ন জমা করতে পারবেন। মনোনয়ন সকলে জমা দেবে এটাই তারা চাইছেন। যদিও শাসক দলকে কটাক্ষ করে তিনি জানান দলের মালিকেরা অনেক গুন্ডা পুষেছে। এখন তাঁরাই মালিককে কামড়াচ্ছে।
উল্লেখ্য গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই ধূলাগোড়ি পশ্চিম এলাকায় বিরোধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ব্যাপক মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগ তোলে বিরোধী দলগুলো। এই নির্বাচনেও একই ভাবে শাসক দল ক্ষমতা দখল করতে চাইছে বলেই এলাকার বিরোধী কর্মীরা অভিযোগ করছেন।