কলেজ ছাত্রী ও প্রেমিককে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ দুই যুবকের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদন, মন্দিরবাজার: এক কলেজ ছাত্রী ও তাঁর প্রেমিককে প্রকাশ্যে একটি রিসর্টের সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এলাকার একটি কারখানার গোডাউনে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল দুই যুবকের বিরুদ্ধে। সেই সময় ছাত্রীর প্রেমিককেও পাশের একটি ঘরে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মন্দিরবাজার থানা এলাকায়।
অভিযোগ, এই দুই যুবক এলাকায় তৃণমূল করায় তাঁদেরকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে এই ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করে মন্দিরবাজারের বিধায়ক জয়দেব হালদার জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিক পুলিশ। বুধবার দুপুরে ঘটনার পর বাড়িতে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন ছাত্রী। ছাত্রীর মুখে ঘটনার কথা শুনে গভীর রাতে ছাত্রীকে নিয়ে তাঁর পরিবারের লোকজন মন্দিরবাজার থানার দ্বারস্থ হয়।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে এলাকার বাসিন্দা অভিযুক্ত দুই যুবক ইউনুস হালদার ও সাহারুল হালদারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রথম বর্ষের ওই কলেজ ছাত্রী। অভিযোগের ভিত্তিতে গণধর্ষণের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিশ নির্যাতিতা ছাত্রীর প্রেমিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালালেও অভিযুক্ত দুই যুবককে এখনও গ্রেপ্তার করেনি। অভিযুক্তরা এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ছাত্রী ও তাঁর পরিবারকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য লাগাতার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকি ছাত্রীর নগ্ন ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতা ছাত্রী ও তাঁর পরিবারের লোকজনেরা। তাঁদের সকলের অভিযোগ, অভিযুক্তরা তৃণমূলের ছত্রছায়ায় থাকায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার না করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। অভিযোগ, উড়িয়ে তৃণমূল বিধায়ক জয়দেব হালদার বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। আমার এলাকায় যারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত।’
প্রসঙ্গত, বুধবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ বাড়ি থেকে মন্দিরবাজার মোড়ে ব্যাঙ্কে এসেছিলেন ডায়মন্ড হারবার ফকির চাঁদ কলেজের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী। এরপর সেখান থেকে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে শঙ্করপুরে রিসর্টে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রকাশ্যে ইউনুস হালদার ও সাহারুল হালদার ছাত্রী ও তাঁর প্রেমিককে হুমকি দিয়ে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে স্থানীয় সেকেন্দারপুরের মোড়ে একটি কারখানার গোডাউনে আটকে রেখে দুষ্কর্ম চালায় বলে অভিযোগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 1 =