কুলগাছিয়ার দুর্ঘটনায় দুই তরুণী অধ্যাপিকা-সহ মৃত্যু চালকের

উলুবেড়িয়া: সোমবার সন্ধ্যায় উলবেড়িয়ার কুলগাছিয়া ফ্লাইওভারে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তিন জনের মত্যু হয়েছিল। গভীর রাতে সামনে এল তাঁদের পরিচয়। জানা গেল, মৃতদের মধ্যে দু’জন ছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা। নন্দিনী ঘোষ (৩৬) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের এবং মিশা রায় (৩৩)এনভারমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ছিলেন। নন্দিনী ঘোষের বাড়ি হুগলির উত্তরপাড়া এলাকায় এবং মিশা রায়ের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে। তৃতীয় মৃত ব্যক্তির নাম বিশ্বজিৎ দাস। তিনি গাড়ির চালক ছিলেন। তাঁর বাড়ি উত্তরপাড়ার কানাইপুরে।
জানা গিয়েছে, দুই অধ্যাপিকা তাঁদের গাড়িতে করে কলকাতায় ফেরার সময় কুলগাছিয়ার কাছে একটি ট্রেলার ডিভাইডার টপকে তাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। গাড়িতে দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই গাড়ি চালক বিশ্বজিৎ দাস(৩১) সহ দুই অধ্যাপিকার মৃত্যু হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দিনী ঘোষ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ছিলেন। তিনি প্রত্যেকদিন নিজের গাড়িতেই যাতায়াত করতেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোনোর সময় সোমবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাড়িতে ফোন করে জানান তিনি বাড়ির ফিরছেন। কিন্তু আটটা বেজে গেলেও খোঁজ না পেয়ে তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার সুদীপ ঘো¡ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁর মোবাইলে বারবার ফোন করেন। কিন্তু ফোন বেজে গেলেও তিনি কোনও সাড়া না পেয়ে লালবাজারে ১০০ নম্বরে ডায়াল করেন। এমনকী নবান্নতেও ফোন করেন। রাতে উলবেড়িয়া থানা থেকে দুর্ঘটনার খবর পান। সুদীপবাবু জানিয়েছেন নন্দিনী একাধিকবার ইউরোপ এবং আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাপত্র পড়তে গেলেও তিনি বিদেশে না থেকে এদেশে অধ্যাপনা করতে চেয়েছিলেন। মিশার মামাও জানিয়েছেন তিনি প্রতিদিন ট্রেনে যাতায়াত করলেও মাঝে মাঝে তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে গাড়িতে ফিরতেন। সোমবারও তেমনই গাড়িতে ফিরছিলেন। তিনি বলেন, রাতে খড়দা থানাতে যোগাযোগ করলে কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে রাতে উলুবেড়িয়া থানা থেকে ফোন পান। তখনই দুর্ঘটনার খবর জানতে পারেন। দুই পরিবারই জানিয়েছে দু’জনেই পরিবারের একমাত্র মেয়ে ছিলেন। দু’জনেই অবিবাহিত ছিলেন। বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জানিয়েছেন দুই অধ্যাপিকার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। দু’জনেই প্রতিভাবান গবেষক এবং শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র এবং শিক্ষকরা শোকস্তব্ধ। মঙ্গলবার সকালে উলুবেড়িয়া মর্গে হাজির ছিলেন অধ্যাপিকাদের অনুরাগীরা।

সোমবার সন্ধ্যায় পথ দুর্ঘটনায় মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই তরুণী অধ্যাপিকা সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এদিন মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় ফেরার সময় হাওড়ার কুলগাছিয়ায় ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর উড়ালপুলে তাদের গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপিকা ডক্টর নন্দিনী ঘোষ (৩৬) এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপিকা ডক্টর মিশা রায় (৩৩)। অধ্যাপিকা নন্দিনী ঘোষের বাড়ি কোন্নগরে এবং মিশা রায়ের বাড়ি সোদপুরে বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 3 =