কলকাতা: একজন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। আর একজন ষষ্ঠের পড়ুয়া। এই দুর্গাপুজোয় গুরু দায়িত্ব সামলাচ্ছে দুই খুদে!এবার পুজোর সর্বকনিষ্ঠ বিচারকও দুই খুদে। বিশেষজ্ঞ বিচারকদের সঙ্গে মণ্ডপে-মণ্ডপে যাচ্ছে তারা। হাতে রয়েছে মশা মারার ব্যাট। প্রতি ১০ মিনিটে সেই ব্যাটে কত মশা মরছে মণ্ডপে, তা গুনে রাখাই ওই দুই খুদের কাজ। সেই হিসেবই বলে দেবে কোন মণ্ডপ ডেঙ্গু নিয়ে কতটা সচেতন।অমাত্রা ও স্বপ্ননীল দু’ জনেই ডেঙ্গু সচেতনতার পরীক্ষা করছে মণ্ডপে মণ্ডপে।
এবছর করোনার বাড়াবাড়ি খানিক কমলেও, মাথাচাড়া দিয়েছে ডেঙ্গু। এ ব্যাপারে প্রত্যেকটি পুজো কমিটিকেই সতর্ক করা হয়েছে। মণ্ডপ করতে গিয়ে কোথাও যাতে জঞ্জাল স্তূপ করে রাখা না হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারও চালাতে বলা হয়েছে।
এই আবহে ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে দুর্গাপুজোয় অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। থিম, আলোকসজ্জা, পরিবেশের পাশাপাশি কোন মণ্ডপ কতটা ডেঙ্গু সচেতন, সেটা বাছাই করা হচ্ছে। কোনও মণ্ডপে মশা রয়েছে কিনা তা যাচাই করে দেখার দায়িত্ব পড়েছে দুই খুদের ওপরে। পুজোর দিনে বড়-বড় বিচারকদের সঙ্গে মণ্ডপ ঘুরে দেখছে তারাও।তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী অমাত্রা দে এবং ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া স্বপ্ননীল দাস পুজোর সর্বকনিষ্ঠ বিচারক। মশা মারার ব্যাট হাতে ঘুরছে তারা। প্রতি ১০ মিনিটে সেই ব্যাটে কত মশা মরছে মণ্ডপে, তার ভিত্তিতেই নম্বর কাটা যাবে পুজো উদ্যোক্তাদের।
অমাত্রা ও স্বপ্ননীল জানাচ্ছে, নেতাজিনগর লো ল্যান্ড মণ্ডপে ১০ মিনিটে ২৯টি, টালা পার্ক প্রত্যয় মণ্ডপে ১০ মিনিটে ৮টি, চোরবাগান সর্বজনীন ১০ মিনিটে ৬টি মশা, নলিন সরকার স্ট্রিট মণ্ডপে ১০ মিনিটে ৫টি মশা, নিউটাউন সর্বজনীন মণ্ডপে ১টি এবং দমদম পার্ক সর্বজনীন মণ্ডপে ১০ মিনিটে ১টি মশা মারা হয়েছে। তবে কাশী বোস লেনে ১০ মিনিটে একটি মশাও পাওয়া যায়নি। তাদের এই পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে ঘোষিত হবে শ্রেষ্ঠ ডেঙ্গু সচেতন পুজোর তালিকা।
এই সম্মানের উদ্যোক্তা রাজর্ষি দাস বলেন, “বিচারকদের মধ্যে অনেকেই সমাজের বড় বড় জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। রয়েছেন ডিজাইনার স্নেহাংশু শেখর দাস, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একে সামন্ত, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী মিহিরকুমার দত্ত, বড়াপান্ডা ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালকাটার অধ্যাপক ডক্টর দীপক কুমার, রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী সমীরকুমার সাহা। কিন্তু এই ছোট দু’ জনই এবারের সেরা বিচারক।