বাঁকুড়ায় ওন্দায় দুই মালগাড়ির সংঘর্ষ, দুর্ঘটনার কারণ জানালেন আদ্রা ডিভিশনের ডিআরএম

ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানাগা বাজারের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনা এখনও সবার মনে টাটকা। প্রায় ২৭৫ জনেরও বেশি যাত্রীর এতে মৃত্যু হয়, আহত হন ১০০০ জনেরও বেশি। এবার বাঁকুড়ায় দুই মালগাড়ির ভয়াবহ সংঘর্ষ। দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়ি ধাক্কা দিল অপর একটি চলন্ত মালগাড়িকে। রবিবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সূত্রের খবর, ওন্দা স্টেশনের সামনে লুপ লাইনে একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। সেই সময় একই লাইনে অপর একটি মালগাড়ি বাঁকুড়া থেকে বিষ্ণুপুরের দিকে যাচ্ছিল। আচমকাই একটি মালগাড়ি অপর মালগাড়িটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে ভয়াবহ শব্দে। সূত্রে খবর, দুই মালগাড়ির ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় এক মালগাড়ির চালক আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রবিবার ভোরে বিকট শব্দে তাঁদের ঘুম ভাঙে। তাঁরা এসে দেখেন একটি মালগাড়ি অপর মালগাড়ির উপর উঠে গিয়েছে। এরপর তাঁরা লোকো পাইলটদের উদ্ধার করেন।
এদিকে এই দুর্ঘটনার জন্য ওভারহেড তার ছিঁড়ে যাওয়ায় আদ্রা-খড়গপুর শাখায় বিঘ্নিত ট্রেন চলাচল। পোরবন্দর-সাঁতরাগাছি এক্সপ্রেসকে টাটানগরের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। একইসঙ্গে আরও বেশ কিছু ট্রেন বাতিল হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।
এদিকে সকালেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান আদ্রা ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার মণীশ কুমার। ঠিক কী কারণে এই দুর্ঘটনা তাও খতিয়ে দেখেন তিনি। এই সম্পর্কে বিস্তারিত আপডেট দিয়েছেন মণীশ কুমার। তিনি বলেন, ‘সম্ভবত মালগাড়ির চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাই তিনি হোম সিগন্যাল দেখতে পাননি এবং ট্রেনটি লুপ লাইনে চলে দিয়েছিল।’ তিনি আরও স্পষ্ট করেন, ‘সিগন্যাল লাল ছিল। তা সত্ত্বেও নজর এড়িয়ে লুপ লাইনে চলে যায় ট্রেনটি।‘
কী ভাবে লুপ লাইনে ঢুকল চলন্ত মালগাড়িটি তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সিগন্যালে কোনও ত্রুটি ছিল কী না সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সঙ্গে এও জানান, ‘এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। এক লোকো পাইলট সামান্য আহত হয়েছেন। আপ লাইনে ট্রেন পরিষেবা দ্রুত স্বাভাবিক হবে এবং ডাউন লাইনও দ্রুত পরিষ্কার করার কাজ চলছে। ক্রেনও নিয়ে আসা হয়েছে। দুই লাইনেই দ্রুত ট্রেন চলাচল করবে।‘
এদিকে এই দুর্ঘটনায় যে সব ট্রেন বতিল সেই তালিকায় রয়েছে পুরুলিয়া-হাওড়া সুপার ফাস্ট, আদ্রা-হাওড়া ফাস্ট প্যসেঞ্জার ট্রেন। তবে ডাউন লাইনে যাতে দ্রুত ট্রেন চলাচল শুরু হয় সেই জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে কাজও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × three =