আইএস জঙ্গি সন্দেহে হাওড়া থেকে গ্রেপ্তার ২, ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ

আইএস জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার ২। জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত থাকার সন্দেহে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। একজনের নাম মহম্মদ সাদ্দাম, অন্যজনের নাম সইদ আহমেদ। ধৃতদের শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানায় এসটিএফ। এরপই সৈয়দ আহমেদ ও সাদ্দামকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। আদালত ও পুলিশ সূত্রে খবর, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে ধৃতদের বিরুদ্ধে। এদিকে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সংস্থার রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয় শুক্রবার। কারণ, এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ইসলামিক স্টেটের মতো একাধিক জঙ্গি সংগঠনের হয়ে প্রচার চালাত তারা। শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যুব সম্প্রদায়েক মগজ ধোলাইয়ের কাজও করেছে। এরই পাশাপাশি দেশবিরোধী কাজে উসকানি দিতে বিস্ফোরণ, নারকীয় হত্যার ভিডিও ছড়িয়ে দিত তারা। বহু যুবকই তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। তবে  এসটিএফের তদন্তকারীদের অনুমান, মহম্মদ সাদ্দাম ও সঈদ হোসেনের পিছনে বড় কোনও মাথা রয়েছে। যোগ রয়েছে পাকিস্তান-মধ্য প্রাচ্যের একাধিক দেশের হ্যান্ডলারদের সঙ্গেও।

এদিকে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ সূত্রে খবর, তাদের কাছে নির্দিষ্ট সূত্রে খবর ছিল খিদিরপুর এলাকায় শুক্রবার একটি গোপন বৈঠক করতে আসছে ওই দুই যুবক।নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বিদ্যাসাগর সেতুর সামনে থেকে আটক করা হয়।আটকের পরই তাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। ধৃতদের কাছ থেকে মেলে একটি ল্যাপটপ, ২টি মোবাইল ফোন। পাশাপাশি মিলেছে ডেবিট কার্ড, ইলেকট্রনিক্স এভিডেন্সও। এমনকী তাঁদের ল্যাপটপে জেহাদি কনটেন্টও মেলে।  এদিকে ধৃতরা অস্ত্র সংগ্রহের কাজ করছিল বলেও অভিযোগ উঠে এসেছে। এর পাশাপাশি অভিযোগ রয়েছে, সংগঠনের জন্য তাঁরা ফান্ডও জোগাড় করছিলেন। আর সব মিলয়ে কোনও নাশকতার পরিকল্পনা ছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখছেন এসটিএফ-এর আধিকারিকেরা। পাশাপাশি এসটিএফের তরফ থেকে এও জানানো হয়, ধৃতদের সইদ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন। এদিন আদালতে সাদ্দাম ও সইদের আইনজীবী জানান, বিদ্যাসাগর সেতুর কাছ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দু’জনকে। অন্যদিকে সরকারি আইনজীবী অবশ্য জানান, বাইকে যাওয়ার সময় তাঁদের আটক করা হয়।

হাওড়ার স্থানীয় সূত্রে খবর, হাওড়া থানা এলাকার ৫৫ নম্বর আফতাবউদ্দিন মুন্সি লেনের বাসিন্দা সাদ্দাম।শিবপুরের গোলাম হোসেন লেনের বাসিন্দা সৈয়দ আহমেদ।  শুক্রবার রাতে এসটিএফ এই দুজনের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। ভোর পর্যন্ত চলে এই তল্লাশি।আর এই তল্লাশির সময়েই ল্যাপটপ, মোবাইল-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উদ্ধার করে তারা।

তবে সাদ্দামের এক প্রতিবেশি রোশন আলি জানান, শুক্রবার রাতে সাদা পোশাকে পুলিশ এসে অভিযুক্তকে নিয়ে যায়। প্রায় ২৫-৩০ বছর ধরে এলাকায় পাঁচতলা আবাসনের তিন তলার ফ্ল‍্যাটে থাকেন তাঁরা।এলাকায় ওই যুবকের পরিচিতিও ভাল ছেলে বলেই। জঙ্গি সন্দেহে এই যুবকের গ্রেপ্তারিতে হতবাক স্থানীয়রা। এদিকে অভিযুক্ত সইদ আহমেদের পরিবারের বক্তব্য, ‘আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এম-টেক-এর ছাত্র।ওর সঙ্গে কোনও রকম জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ নেই। সে চাকরি করে।ওর বন্ধুর সঙ্গে একটি জায়গায় যাচ্ছিল।এই সব অভিযোগ মিথ্যা।’ তবে হাওড়ার ওই দুই যুবকের গ্রেপ্তারে এসটিএফ-এর গোয়েন্দারা মনে করছেন, এখানেই শেষ নয়। এই জাল বহুদূর ছড়িয়ে আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − four =