ত্রিপুরা আমার ঘরের মতো, আগরতলায় পা রেখেই বার্তা তৃণমূল সুপ্রিমোর

‘ত্রিপুরা আমার ঘরের মতো। বাংলা যদি আমার প্রথম ঘর হয়, তাহলে ত্রিপুরা আমার দ্বিতীয় ঘর।’ সোমবার আগরতলায়  পা রেখে এমনই মন্তব্য করতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এর পাশাপাশি ত্রিপুরা কেন তাঁর নিজের ঘর তাও ব্যাখ্যা করেন মমতা। আর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এমন বার্তার মধয্ দিয়ে ত্রিপুরাবাসীকে যে কাছে টেনে নিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো  তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এদিন দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ আগরতলা বিমানবন্দরে নামেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব সহ ত্রিপুরা তৃণমূল নেতৃত্ব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিমাবন্দরে দেখা মাত্রই স্লোগান ওঠে ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’ থেকে ‘দিদি এগিয়ে চল, আমরা সাথে আছি’। পাশাপাশি ত্রিপুরার পাহাড়িয়া ভাই-বোন, উদ্বাস্তু থেকে সমস্ত ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাতে দেখা যায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।

\এদিন ত্রিপুরায় পা রেখেই ত্রিপুরাবাসীকে আশ্বাস ও শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘আমি মনে করি, এটা আমার নিজেরই ঘর। ত্রিপুরায় এলে মনে হয় যেন নিজের ঘরেই এসেছি। এখানে এলে নিজের ভাষায় কথা বলতে পারি। সেটা খুব ভাল লাগে। এখানকার মানুষদের খাওয়া-দাওয়া, বেশভূষা, চলন-বলন যেমন, আমাদেরও তাই। সবচেয়ে বড় কথা হল, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারি।’ পাশাপাশি এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো এ আশ্বাসও দেন, তিনি ও তাঁর দল সর্বদা ত্রিপুরাবাসীর পাশে রয়েছে। আর এরই রেশ ধরে তৃণণূল সুপ্রিমো এদিন এও বলেন, ‘যখন তোমার কেউ ছিল না তখন ছিলাম আমি। আজ এই কথাটাই বলতে এসেছি।’

ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারেই দু-দিনের সফরে আগরতলা এসেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সোমবার তাঁদের কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরে পুজো দেন মমতা। পুজো দেওয়ার আগে এদিন কোনও রাজনৈতিক কথা বলতে না চাইলেও শাসকদলের সাম্প্রতিক অত্যাচারের কথা স্মরণ করিয়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিজেপিকে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, ‘ত্রিপুরাবাসীকে একটা কথা বলতে চাই, যখন ত্রিপুরাবাসীর কাছে কেউ ছিল না। বিজেপির অত্যাচার চলছিল, সাংবাদিকদের উপর অত্যাচার চলছিল, আমাদের কর্মীদের উপর অত্যাচার হয়েছে। তখন তৃণমূল পাশে থেকে কাজ করেছে।’ তৃণমূল দলটা ত্রিপুরায় নতুন হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যে এই রাজ্য নতুন জায়গা নয়, তা উল্লেখ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। নিজের স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি জানান, ‘কংগ্রেস প্রথম যখন ত্রিপুরায় আসে, তখন আমি ত্রিপুরায় ঘরের মতো থেকে কাজ করেছি। এখানকার সমস্ত জায়গা আমি বাংলার মতোই চিনি। সেই সময় যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁদের অনেকেই হয়ত হারিয়ে গিয়েছেন। এখনও তাঁদের মনে-মনে খুঁজে বেড়াই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two + 17 =