কলকাতা: তৃণমূল যুব কমিটিতে নেই দু’বারের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু ভট্টাচার্য। এরপরই তাঁর ফেসবুক পোস্ট ঘিরে নড়েচড়ে বসেন বঙ্গ রাজনীতিবিদরা। কারণ, সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, ‘লেফট অল জব অ্যাট অল ইন্ডিয়া ইয়ুথ তৃণমূল কংগ্রেস।‘ যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় যুব তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব ছাড়লাম।আর এখানেই উঠে গেল প্রশ্ন, তাহলে কি যুব কমিটিতে জায়গা না পেয়ে অভিমানী তরুণ তুর্কি দেবাংশু নাকি আরও অনেক কিছু বাকি। অনেকের ধারনা হতেই পারে পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের মূল সংগঠনে কোনও বড় দায়িত্ব পাচ্ছেন তিনি। তবে জবাব এখনও অধরা। পরে অবশ্য নিজের পোস্টটি মুছে দিতে দেখা যায় তাঁকে।বদলে মনখারাপের একটি ইমোজি পোস্ট করেন। রাজ্যের যুব তৃণমূলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয় বুধবার। আর তা সামনে আসতেই দেখা যায় তালিকায় ভিড় জমিয়েছেন রাজ্যের প্রথম সারির নেতামন্ত্রীদের ছেলেমেয়েরা। রয়েছেন অতীন ঘোষের কন্যা প্রিয়দর্শিনী ঘোষ। প্রয়াত নেতা সাধন পাণ্ডের কন্যা শ্রেয়া পাণ্ডেও জায়গা পেয়েছেন যুবর নতুন রাজ্য কমিটিতে। এমনকী ক্ষিতি গোস্বামীর কন্যা বসুন্ধরা গোস্বামীও রয়েছেন সেই তালিকায়। যুব কমিটির ৪৭ জনের তালিকায় সভানেত্রী হিসেবে রয়েছেন সায়নী ঘোষ। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য।
এই তালিকায় নজরে আসে পাশাপাশি রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজার কন্যা পূজা পাঁজার নাম। যিনি রয়েছেন যুব তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে। নাম রয়েছে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর ছেলে সৌরভ ভট্টাচার্যরও। শঙ্কর সিংয়ের পুত্র শুভঙ্কর, কৃষ্ণপ্রতাপ সিংয়ের পুত্র শক্তিপ্রতাপ, সঞ্জয় বক্সির পুত্র ছেলে সৌম্য বক্সি, শোভনদেবের পুত্র সায়নদেররাও রয়েছেন যুব তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে। অর্থাৎ, নতুন যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে একঝাঁক নেতা-মন্ত্রীর ছেলেমেয়েরা স্থান পেলেও তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই তালিকায় নেই তৃণমূলের তরুণ প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ দেবাংশু ভট্টাচার্যের।
আর এই তালিকা সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়াই এই নিয়ে হইচই পড়ে যায়। দেবাংশু ভট্টাচার্য দেব নামে তাঁর যে ফেসবুক হ্যান্ডেলটি রয়েছে, সেই হ্যান্ডেল থেকে একাধিক পোস্ট হতে শুরু হয়। একটি পোস্টে নজরে আসে, কালো ব্যাকগ্রাউন্ডের উপর এক স্মাইলি। ফেসবুকের ওই পোস্টগুলিতে প্রচুর রিঅ্যাকশন ও কমেন্টও আসতে শুরু করে। যদিও এই বিষয়ে দেবাংশু জানান, ‘আমায় শুধু যুব কমিটিতে রাখা হয়নি। এখন আমি শুধু দলের মুখপাত্র। তবে এর সঙ্গে দল ছাড়ার কোনও বিষয় নেই।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘বাকিটা দলের সিদ্ধান্ত। দল যা সিদ্ধান্ত নেয় নিয়েছে।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘মূল সংগঠনে যাওয়ার বিষয়ও এখনই নেই। দল আমায় কীভাবে কাজে লাগাতে চায় আমি জানি না। ক্ষোভের কোনও জায়গা নেই। বিষয়টা নিয়ে ভাবার সময় পাইনি। অনেকে জানতে চেয়েছে। তবে যারা সরিয়েছে তারাই বলতে পারবে বাকিটা।‘ তবে দেবাংশু যাই বলুন না কেন, এরই পাশাপাশি শুরু হয়েছে আরও এক জল্পনা তাহলে কী দেবাংশু দল ছাড়বেন?