নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: নির্বাচন পরবর্তী হিংসা রুখতে এবার দলের কর্মীদের প্রতি কড়া বার্তা দিল তৃণমূল। বিরোধীদের প্রতি কোনও প্রতিহিংসা নয়, বন্ধ করা যাবে না বিদ্যুৎ ও পানীয় জল পরিষেবাও। বাঁকুড়ার ইন্দপুরে একটি পথসভা থেকে দলের কর্মীদের এমনই কড়া বার্তা দিলেন বাঁকুড়ার নব নির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। বিষয়টিকে তৃণমূলের দু’মুখো নীতি বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
নির্বাচন পরবর্তী সময়ে শুধু বাঁকুড়া জেলা নয়, সারা রাজ্যেই অল্পবিস্তর নির্বাচন পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি। বিরোধীরা যে সমস্ত এলাকায় বেশি ভোট পেয়েছে, সেই সমস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানীয় জল পরিষেবা বন্ধেরও অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন জায়গায়। নির্বাচন পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিরোধী বিজেপি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে এ রাজ্যে। সেই প্রতিনিধি দলের পরিদর্শনের মাঝেই এবার নির্বাচন পরবর্তী হিংসা বন্ধে কড়া অবস্থান নিল তৃণমূল।
মঙ্গলবার বাঁকুড়ার ইন্দপুরে ভোটদাতাদের অভিনন্দন জানানোর কর্মসূচিতে হাজির হয়ে বাঁকুড়ার নবনির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ তথা তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী দলের কর্মীদের হিংসা বন্ধের কড়া নির্দেশ দেন। অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘মানুষ বিরোধীদের পরাজিত করেছে। তারা মারা গিয়েছে। তাদের ওপর কোনও ভাবেই অত্যাচার করা চলবে না। তাদের বিদ্যুৎ ও পানীয় জল পরিষেবা বন্ধ করা চলবে না। তৃণমূল প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না।’ একই সঙ্গে বিরোধীদের প্রতি তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘কেউ আমাদের কর্মীদের ওপর আঘাত হানার চেষ্টা করলে, প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ হবে। হামলাকারীদের রেয়াত করা হবে না।’
পরে নিজের বক্তব্যের সমর্থনে অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘বিরোধীদের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়েছে। অনেকেই এখন অনুশোচনা করছেন। আমাদের দলের কর্মীদের অনেকের ক্ষোভ রয়েছে। কিন্তু আমরা বলেছি কোনও রকম প্রতিহিংসা চলবে না। বাঁকুড়াতেও কোথাও কোথাও পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমি বলেছি এই ধরনের কাজ চলবে না। তবে কেউ অন্যায় ভাবে আমাদের আঘাত হানলে পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ করা হবে।’
তৃণমূল সাংসদের এই বক্তব্যকে দু’মুখো নীতি বলে কটাক্ষ করেছে। বাঁকুড়ার প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের দাবি, তৃণমূল চোরকে চুরি করতে বলে গৃহস্থকে সতর্ক থাকতে বলে। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তবে তৃণমূলের শুভবুদ্ধির উদয় হয়ে থাকলে তা ভালো।