কলকাতা: পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সহ-সভাপতি শাকিল আহমেদ ওরফে মাস্টার শাকিলের ছেলে তহসিন আহমেদকে রাজ্য পুলিশ শনিবার রাতে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ, তহসিন ৩৫০ কোটি টাকার বিশাল চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে জড়িত।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তহসিনকে জাতীয় সড়ক ১৯-এর ধারে চন্দ্রচূড় মোড়ের কাছে ঝাড়খণ্ডগামী একটি বাস থেকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে প্রায় ৩১ লক্ষ টাকার সোনার অলংকারও উদ্ধার হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সে ঝাড়খণ্ডে পালানোর পরিকল্পনা করছিল।
অভিযোগ অনুযায়ী, তহসিন আহমেদ আসানসোলের প্রায় তিন হাজার বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে একটি বেআইনি কর্পোরেট সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। বিনিয়োগকারীদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, ১ লক্ষ টাকার বিনিয়োগে ২০ মাসে ২.৮ লক্ষ টাকার রিটার্ন — অর্থাৎ প্রতি মাসে প্রায় ১৪ শতাংশ সুদ। কিন্তু ১৫ অক্টোবর, অর্থ ফেরতের দিন, তহসিন হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। পরবর্তীতে সে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করে জানায়, ২০ অক্টোবরের আগে সে প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারবে না।
এই ঘটনাটি প্রথম প্রকাশ্যে আনেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তহসিন আহমেদের ভিডিওটি শেয়ার করে তার অবিলম্বে গ্রেফতারির দাবি জানান এবং ইডি ও সেবি–র মাধ্যমে তদন্তের আহ্বান জানান। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি তোলেন তিনি।
পরবর্তীতে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যও এই বিষয়ে পোস্ট করেন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রতারিত বিনিয়োগকারীদের বেশিরভাগই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে, অভিযুক্ত তহসিন আহমেদ ও তার পিতা শাকিল আহমেদের সঙ্গে দলের এখন কোনও সম্পর্ক নেই। দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মাহফুজুল হাসান বলেন, “শাকিল আহমেদ একসময় আমাদের সংখ্যালঘু সেলের সহ-সভাপতি ছিলেন, কিন্তু বর্তমানে তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।”

