নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: ভোটে জয়লাভের পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা শোনা গিয়েছিল বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর গলায়। এবার প্রকাশ্য রাস্তায় এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে দেখা গেল সৌমিত্র খাঁকে। সৌমিত্র খাঁর একের পর এক এই আচরণ কী নতুন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে? সোমবারের পর থেকে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নতুন করে জল্পনা। সৌমিত্র নিজে বিষয়টিক নিছক সৌজন্য বলে দাবি করলেও, তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য উস্কে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলের জল্পনাকেই।
সৌমিত্র খাঁ রাজ্য রাজনীতিতে এক বিতর্কিত চরিত্র। ২০১১ সালে কংগ্রেসের টিকিটে কোতুলপুর বিধানসভা থেকে জয়লাভ করে বিধায়ক হন। দু’বছর যেতে না যেতেই ২০১৩ সালে যোগ দেন তৃণমূলে। বিধায়ক হিসাবে মেয়াদ শেষের আগেই ২০১৪ সালে তৃণমূলের টিকিটে জিতে বিষ্ণুপুরের সাংসদ হন তিনি। সেবারও মেয়াদ শেষের আগেই দলবদল করেন তিনি। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে দলবদল করে বিজেপির প্রার্থী হন তিনি। ২০১৯ এ বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য বিষ্ণুপুরের সাংসদ হন সৌমিত্র খাঁ। ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনেও নিজের প্রাক্তন স্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে তৃতীয় বারের জন্য বিষ্ণুপুরের সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
নির্বাচনে জয়লাভের পরই তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডের গালভরা প্রশংসা শোনা গিয়েছিল সৌমিত্র খাঁর গলায়। নিজের দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। একের পর এক সৌমিত্র খাঁর বিস্ফোরক সেই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে সৌমিত্র খাঁর ফের শিবির বদলের জল্পনা শুরু হয়। সেই জল্পনাকেই সোমবার অক্সিজেন জোগায় তৃণমূল নেতাকে প্রকাশ্যে সৌমিত্র খাঁর প্রণামের ঘটনা।
জানা গিয়েছে, সোমবার রতনপুরে সাংসদ উন্নয়ন তহবিল সংক্রান্ত কাজে যান সৌমিত্র খাঁ। ফেরার সময় রাস্তায় তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য নেতা বর্তমানে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত ভবতারণ চক্রবর্তীকে দেখতেই প্রকাশ্যে তাঁর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন সৌমিত্র। করেন কুশল বিনিময়ও। আর এতেই সৌমিত্রর দলবদল নিয়ে তৈরি হওয়া জল্পনা নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছে। যদিও সৌমিত্র খাঁ নিজে এই ঘটনাকে নিছকই সৌজন্য বলে দাবি করেছেন। তৃণমূল নেতা ভবতারণ চক্রবর্তীও বিষয়টিকে সৌজন্য বলে দাবি করলেও, সৌমিত্রর দলবদলের জল্পনাকে ওড়াতে পারেননি। জল্পনা ওড়ায়নি তৃণমূল নেতৃত্বও।