যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের পাল্টা সভার ডাক দিল তৃণমূলের কর্মচারি ফেডারেশন। আর এই সভা হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়া তথা তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের অন্তর্গত হাজরা মোড়ে। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, আগামী ৩ জুনের তৃণমূলের কর্মচারি ফেডারেশনের ডাকা এই সভায় হাজির থাকবেন রাজ্যের ছয় মন্ত্রী-সহ তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিও। আপাতত যা সূত্রে খবর, এই ছয় মন্ত্রীর তালিকায় রয়েছেন কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। থাকবেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং তৃণমূল কর্মচারী ফেডারেশনের চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
এদিকে সূত্রে খবর, এই সভার মূল লক্ষ্য, বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারিরা যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বসবাসের এলাকাকে তাঁদের আন্দোলন, সভা, মিছিলের ‘লক্ষ্য’ হিসাবে বেছে নিয়েছেন, শাসকদলের অনুগামী কর্মচারীদের সভা তারই ‘পাল্টা’, এমনটাই ধারনা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। কারণ, সাধারণত শাসকদলের অনুগামী সরকারি কর্মচারি ফেডারেশন প্রকাশ্যে এমন সভা করতে দেখা যায় না। তবে এবার একটু ব্যতিক্রমী পথেই হাঁটছেন তাঁরা। এদিকে ডিএ নিয়ে যেভাবে ঝাঁঝ চড়াচ্ছেন বিরোধী সংগঠনগুলি, সেখানে তাঁদের ‘জবাব’ দেওয়া উচিত বলেই মনে করেছে শাসকদলের অনুগামী সরকারি কর্মচারি ফেডারেশন।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস যাবৎ বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে বিভিন্ন সরকারি কর্মচারি ইউনিয়ন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন করে চলেছে। এই ইস্যুতেই গত ৬ মে হাজরা মোড়ে আয়োজিত সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সভায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের হয়ে সওয়াল করতেও দেখা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে। বকেয়া ডিএ-র দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন ‘যুক্তিযুক্ত’ বলে দাবিও করেন তাঁরা। সঙ্গে রাজ্য সরকারকে আক্রমণও করেন কড়া ভাষায়। এই ৬ মে-তেই তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে মিছিলও করেছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এবার এরই পাল্টা এক সভা করে তাঁদের জবাব দিতে চাইছে তৃণমূলের সরকারি কর্মচারি ফেডারেশন। আর এই সবার মধ্যে দিয়েই বিরোধীদের শাসকদল এই বার্তাও দিতে চাইছে যে, মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র তথা বসবাসের এলাকায় বিরোধী সংগঠনের ‘আস্ফালন’ কোনও ভাবে বরদাস্ত করবে না শাসকদল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যাই মনে করুন না কেন, ৩ জনের এই সভাকে ‘পাল্টা’ কর্মসূচি বলতে রাজি নয় তৃণমূল কর্মচারি ফেডারেশন। বরং সংগঠনের তরফ থেকে দাবি করা হয়, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা যে এখনও সরকারের পাশে রয়েছেন, সেই বার্তা তুলে ধরতেই এই সভার আয়োজন।