জাতীয় দলের তকমা হারানোয় বেশ অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ, কোনও রাজনৈতিক দল যখন জাতীয় দলের স্বীকৃতি পায়, তখন সেই দলটি কিছু বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকে। যেমন, প্রথমেই যেটা বলতে হয় তা হল এক্ষেত্রে দলীয় প্রতীক। এটা নির্বাচনী লড়াইয়ের ক্ষেত্রে একটি বড় ইস্যু এতে কোনও সন্দেহ নেই। কোনও দল জাতীয় দলের তকমা পেলে, সংশ্লিষ্ট দলটির জন্য একটি প্রতীক রিজার্ভ বা নির্দিষ্ট করা থাকে। যেমন তৃণমূলের ক্ষেত্রে দলের প্রতীক জোড়াফুল। সেক্ষেত্রে তৃণমূল যদি জাতীয় দল থাকত, তাহলে জোড়াফুল প্রতীকও রিজার্ভ থাকত। তবে জাতীয় দলের তকম হারানোয় এখন আর তাদের দলীয় প্রতীক রিজার্ভ থাকল তা কিন্তু হলফ করে বলা যাবে না। তবে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও মণিপুরে দলের নাম ও প্রতীকে ভোট ময়দানে নামতে পারবে তারা। কিন্তু জাতীয় স্তরে দেখতে গেলে, জোড়াফুল প্রতীক আর তৃণমূলের জন্য রিজার্ভ থাকছে না।
এছাড়াও সমস্যা আছে সম্প্রচারের ক্ষেত্রেও। কারণ, কোনও দল জাতীয় দলের স্বীকৃতি পেলে সেই দলটি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকারি পরিচালিত টেলিভিশন বা রেডিয়োও কোনও সম্প্রচারের জন্য নির্দিষ্ট সময় পেতে পারে বা পায়ও। তবে জাতীয় দলের তকমা হারানোর ফলে, সেই সুবিধা তৃণমূলের আর থাকছে না।
এরপর আসছে নির্বাচন দিনক্ষণ স্থির করার ক্ষেত্রেও বেশ কিছু সমস্যা। কারণ,কোনও দল যদি জাতীয় দলের তকমা পায়, তাহলে নির্বাচন দিনক্ষণ স্থির করার ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট দলটির একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা থাকে। যেমন নির্বাচনী বিধি তৈরিই হোক বা ভোটের দিনক্ষণ স্থির করার ক্ষেত্রেই হোক, জাতীয় দলগুলি একটি নিজেদের মতামত দিতে পারে। জাতীয় দল হওয়ার সুবাদে তৃণমূলের হাতেও এতদিন সেই সুবিধা ছিল। কিন্তু সোমবার সন্ধেয় জাতীয় দলের তকমা হারানোয় এই সুযোগ আপাতত থাকছে না তৃণমূলের হাতে।
প্রসঙ্গত, সোমবার তৃণমূল ছাড়াও সিপিআই ও শরদ পাওয়ারের এনসিপিও জাতীয় দলের তকমা হারিয়েছে। অর্থাৎ, বর্তমানে দেশে জাতীয় দল হিসেবে থাকছে ছটি দল। কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম, বিএসপি, এনপিপি এবং সাম্প্রতিক সংযোজন আম আদমি পার্টি। তবে পরবর্তী সময়ে তৃণমূল যদি আবার জাতীয় দলের স্বীকৃতি ফিরে পায় তাহলে এই সব সমস্যা আর থাকবে না।