তৃণমূলের উপপ্রধানকে ঘুমন্ত অবস্থায় গুলি করে খুন, অভিযুক্ত স্থানীয় জমি মাফিয়া

উত্তর ২৪ পরগনা: জনপ্রিয় তৃণমূল নেতা তথা গুমা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানে বিজন দাসকে (৪৯) ঘুমন্ত অবস্থায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেজ থেকে গুলি করে খুন দুষ্কৃতীর। প্রাথমিক অনুমান এলাকায় জমি দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় তাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। খুনের অভিযোগ উঠেছে এলাকারই জমি মাফিয়া গৌতম দাসের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

ঘটনার খবর পেয়েই রবিবার রাতেই হাসপাতালে আসেন বারাসাতের সাংসদ তথা বারাসাত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। সোমবার সকালে গুমায় বিজন দাসের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী ও ছেলে, মেয়ের সঙ্গে দেখা করেন স্থানীয় বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী।

রবিবার দলীয় কাজ সেরে গুমা স্টেশনে সংলগ্ন এলাকার একটি বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক। সেখানে তিনি শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এলাকায় একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলায় সবাই সেদিকেই ব্যস্ত ছিলেন। সেই সুয়োগে রাত এগারোটা নাগাদ গৌতম দাস ঘরে ঢুকে পরপর তিন রাউন্ড গুলি চালায় উপপ্রধানকে লক্ষ্য করে। তার মাথায় ও শরীরে গুলি লাগে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে বারাসাত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয়দের দাবি, গুলির শধের পর ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে দেখেছেন এলাকার একাধিক মানুষ। ঘটনার পরপরই অশোকনগর এবং হাবড়া থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। গৌতম দাস ঘটনার পর থেকেই পলাতক তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, দলের অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ও পুরনো কর্মী ছিলেন বিজন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে দলের কাজ করতেন, অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তাকে যে ভাবে খুন করা হল তাতে দলের ক্ষতি হল। যে বা যারা এই কাজ করেছে তার কঠিন শাস্তি চাই। দল বিজনের পরিবারের সঙ্গে আছে। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, ঘটনা দেখে অনুমান করছি এটি একটি পরিকল্পিত খুন। ঘুমন্ত অবস্থায় বিজনকে খুন করা হয়েছে। আমাদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আগে প্রধান পরে উপপ্রধান হয়েছিলেন। বিজনের মৃত্যুতে লোকসভার আগে দলের ক্ষতি হল। স্থানীয় বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, সোমবার সকালে আমি বিজনের বাড়িতে গিয়েছিলাম। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দলের নির্দেশে আমাদের দলীয় কর্মীদের আইন হাতে নিতে বারণ করেছি। পুলিশকে অনুরোধ করেছি এই ঘটনার পেছনে যেই থাকুক না কেন কোনও রাজনৈতিক রং না দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করে তার কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে। এদিন বিজনকে শেষ দেখতে বারাসাতের সাংসদ, খাদ্যমন্ত্রী, সভাধিপতি, সহ তৃণমূলের বহু নেতা নেত্রী ও কর্মীরা বারাসাত হাসপাতালে ভিড় জমায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − 8 =