বেলেঘাটা গুলিকাণ্ডে অবশেষে গ্রেপ্তার তৃণমূল নেতা রাজু নস্কর। ঘটনার সাতদিনের মাথায় ওড়িশার গোপালপুর থেকে রাজুসহ মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বেলেঘাটার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড। তখন গুলি চালনার অভিযোগ ওঠে রাজুর বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পর থেকে সঙ্গীদের নিয়ে গা ঢাকা দেন বেলেঘাটা এলাকার এই দাপুটে তৃণমূল নেতা। বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজুর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এরপর বিশেষ সূত্রে লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পারেন ওড়িশায় গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন রাজু। রবিবার রাতে ওড়িশার বিলাবহুল একটি হোটেল অভিযান চালিয়ে রাজুসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেন কলকাতা পুলিশের গুণ্ডাদমন শাখার আধিকারিকেরা। এদিকে তৃণমূল নেতা রাজু নস্করের বিরুদ্ধে তৃণমূল কার্যালয়ে আগ্নেয়াস্ত্র মজুতের অভিযোগও উঠেছিল। সঙ্গে ঘটে যায় বেলেঘাটায় গুলি চালনার ঘটনাও। এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য–রাজনীতি। সরব হয় বিরোধী শিবিরও। দাবি করা হয় রাজুকে গ্রেপ্তারের। এরপরই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, দোষীকে রেয়াত করা হবে না। সেটা যে দলেরই নেতা হোক না কেন। এরপর অবশেষে পুলিশের জালে বেলেঘাটা ঘটনার মূল অভিযুক্ত রাজু নস্কর।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার বেলেঘাটার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়। রাজু নস্কর এবং অলকানন্দা দাসের অনুগামীদের মধ্যে তুমুল মারপিঠ হয় বলে অভিযোগ। অলকের অনুগামীদের অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ে আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করতেন রাজু। রাজুর অফিসে গেলে সেখান থেকে গুলি চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ করে অলকানন্দের গোষ্ঠী। এমনকী গুলিকাণ্ডে একজন আহতও হন। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন রাজু। বেলেঘাটার আলোছায়া এলাকায় তৃণমূল নেতা রাজু নস্করের পার্টি অফিসে হামলা চালায় অপর গোষ্ঠী। পালটা প্রতিরোধ গড়ে তোলে রাজু নস্করের লোকেরা। শুরু হয় তুমুল সংঘর্ষ। এমনকী সংঘর্ষ চলাকালীন রাজু নস্কর গুলি চালান বলে অভিযোগ। গুলি লাগে পিনকা নামে জেলেপাড়ার এক যুবকের গায়ে।
এরপর রাজুর বিরোধী শিবিরের তরফ থেকে দাবি করা হয়, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে রাজু নস্কর হিংসাত্মক কার্যকলাপের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। যদিও রাজু নস্করের দাবি ছিল, ‘অফিস থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ষড়যন্ত্র।’ এদিকে বেলেঘাটায় সংঘর্ষের ঘটনার পরই ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল কলকাতা পুলিশ। এদিকে মূল অভিযুক্ত রাজু ও তাঁর শাগরেদরা গা–ঢাকা দিয়েছিলেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অবশেষে তাঁদের ওড়িশা থেকে গ্রেপ্তার করল গুণ্ডা দমন শাখা।