মেঘালয়ে বিজেপিকে হারাতে পারে তৃণমূলই, তুরার জনসভায় দাঁড়িয়ে দাবি অভিষেকের

দুদিনের মেঘালয় সফরে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সব ঠিক থাকলে ২০২৪-এর শুরুতে নির্বাচন রয়েছে মেঘালয়ে। তার আগে কর্মীদের উৎসাহ দিতে পৌঁছেছেন তিনি। মেঘালয়ের মানুষ যাতে তৃণমূলের ওপর আস্থা রাখতে পারে, সেটা বোঝাতে জনসভায় যোগ দিয়েছেন তিনি। সফরের দ্বিতীয় দিনে মেঘালয়ের গারো পাগাড়ের তুরায় একটি জনসভায় অংশ নেন তিনি। অভিষেকের সফরের মধ্যেই মেঘালয়ে তৃণমূল বড়সড় সাফল্যও পেয়েছে। উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যটিতে মাস চারেক আগে সদস্য সংগ্রহ শুরু করেছিল এরাজ্যের শাসকদল। মাত্র চার মাসের মধ্যেই সেখানে ১ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ করে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপিকে যদি কেউ হারাতে পারে, তাহলে সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং তৃণমূল কংগ্রেস। এদিনের জনসভায় এমনটাই দাবি করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, মেঘালয়ে পরিবর্তন সময়ের অপেক্ষা। তৃণমূলের নেতৃত্বেই উত্তরপূর্বের এই রাজ্যটিতে নতুন সরকার গঠিত হবে বলে দাবি করেছেন তিনি।

মেঘালয় সফরে শুক্রবার গারো এলাকার তুরা বিধানসভা কেন্দ্রে একটি বড়সড় জনসভা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেই সভায় তিনি দাবি করেন, বিজেপিকে হারাতে তৃণমূলই সেরা বিকল্প। কংগ্রেসকে (Congress) ভোট দেওয়া মানে ঘুরিয়ে বিজেপিকেই সাহায্য করা।

জনসভায় অভিষেক বলেন, আমরা সবাই একসময় কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। কিন্তু আমরা বুঝতে পেরেছি, কংগ্রেসের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় টুইট করে বিজেপিকে হারানো যাবে না। সেটা করতে হলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হবে। বিজেপিকে যদি কেউ হারাতে পারে সেটা তৃণমূল কংগ্রেস। সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করে দেখিয়েছেন। বাংলার ১০ কোটি মানুষ মমতাকে আশীর্বাদ করেছেন। বাংলা যদি পারে, মেঘালয় কেন পারবে না। মেঘালয়কে ছোট রাজ্য হিসাবে যেভাবে লাগাতার বঞ্চনা করা হয়েছে, সেটা তুলে ধরেন তিনি। মেঘালয়ের বিজেপি-এনপিপি জোট সরকার যে আসলে মানুষের জন্য কাজই করেনি, সেটাও নিজের বক্তৃতার ছত্রে ছত্রে বুঝিয়ে দেন তৃণমূল নেতা। তাঁর বক্তব্য, মেঘালয়ের মানুষই মেঘালয়কে শাসন করবে। দিল্লি থেকে কেউ এসে মেঘালয়কে শাসন করতে পারবে না। মেঘালয়ে ডবল ইঞ্জিন সরকার কোনও উন্নয়ন করেনি। এ তো সুন্দর রাজ্য রাস্তাঘাট, পরিকাঠামোগত দিক থেকে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। অভিষেকের মুখে এদিনে উঠে আসে অসমের সঙ্গে মেঘালয়ের সীমানা বিবাদের প্রসঙ্গও। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দাবি, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বিজেপিকে (BJP) খুশি করতে মেঘালয়ের মাটি অসমকে উপহার দিয়েছেন।

মেঘালয়ের মাটিতে দাঁড়িয়ে দলের প্রতীক নিয়ে নতুন ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তৃণমূলের (TMC) প্রতীকের প্রতিটি ফুলে যেমন করে তিনটি পাপড়ি সহাবস্থান করছে, তেমনই গারো, খাসিয়া, জয়ন্তিয়ার মানুষ একত্রিত হয়ে তাঁর দলকে সমর্থন করবে। অভিষেক বলে দেন, তৃণমূলের TMC মানে আসলে টেম্পল (মন্দির), মস্ক (মসজিদ) এবং চার্চ (গির্জা)। গারো পাহাড়ি এলাকার এই জনসভায় অভিষেক মূলত স্থানীয় ইস্যুতেই সরব হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × five =