নদীপথে বিদেশি পর্যটকদের ঢলে উচ্ছ্বসিত ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদন, মুর্শিদাবাদ: শীতের আঁচ পড়তেই নদীপথে বিদেশি পর্যটকদের ঢল নামায় আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, নদীপথ (১ নম্বর ইন্ডিয়া ওয়াটার ওয়ে) হওয়ায় এবার মুর্শিদাবাদে হাজার হাজার বিদেশি পর্যটকের পা পড়বে।
ব্যবসায়ীদের লক্ষ্মীলাভের সুযোগ আসবে এবার। লালবাগ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নদীপথে পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য। সেইমতো জেটিও তৈরি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবারও করেছিলাম। অবশেষে নদীপথ চালু হল।’
ঠান্ডার প্রভাব পড়তেই গত মঙ্গলবার সাবেকি নবাব নগরিতে পা পড়ল বিদেশি পর্যটকদের। মঙ্গলবার কলকাতা থেকে জলপথে হাজারদুয়ারি চত্বরে নোঙর ফেলে ৩৫ জন বিদেশি পর্যটকের বিলাসবহুল লঞ্চ। ওই দলে ছিল ২৬ জন মার্কিন নাগরিক ও ৬ জন কানাডিয়ান নাগরিক। হাজারদুয়ারি সহ মুর্শিদাবাদের ঐতিহাসিক স্থাপত্য পরিদর্শন করে পরদিন নদীপথেই কলকাতা অভিমুখে রওনা দেয় বিদেশি পর্যটকের দল।
হাজারদুয়ারি স্ট্রেট সূত্রে খবর, প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার বিদেশি পর্যটকের পা পড়ে মুর্শিদাবাদে। এবার নভেম্বরের শুরু থেকেই বিদেশি পর্যটকের ঢল নামায় উচ্ছ্বসিত পর্যটন কেন্দ্রের সঙ্গে জড়িত ছোট বড় ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ নিউ প্যালেস ঘাটে নোঙর ফেলে বিদেশি পর্যটকে ঠাসা লঞ্চ। দিনভর পর্যটকরা ঘুরে দেখলেন হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়াম, কাটরা মসজিদ, সিরাজের সমাধিস্থল, ইমামবাড়া, কাঠগোলা বাগান, বড়নগরে নাটরের রানি ভবানীর টেরাকোটার তৈরি চারবাংলা মন্দির সহ একাধিক ঐতিহাসিক স্থাপত্য।
স্থানীয় ট্যুরিস্ট গাইডরা বিদেশি পর্যটকদের সঙ্গী হয়ে ঘুরে দেখালেন এবং তাঁদের ভাষাতেই ঐতিহাসিক স্থানগুলির গুরুত্ব ও ইতিহাস বোঝালেন। টাঙায় চেপে ভ্রমণের মজাও নিলেন তাঁরা। মরসুমের শুরুতেই নদীপথে পর্যটকদের আসা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। হাজারদুয়ারি প্যালেস সংলগ্ন ব্যবসায়ী মুর্শেদ আলম বলেন, ‘বিদেশি পর্যটকরা এলে এদেশের তৈরি হাতের কাজের বিভিন্ন সামগ্রী সংগ্রহ সঙ্গে করে নিয়ে যায়। দামদর করে না। যত বেশি বিদেশি পর্যটক আসবে, তত আমাদের উপার্জন বাড়বে।’ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ট্যুরিস্ট গাইড রমেন চৌধুরী বলেন, ‘বিদেশিদের ইতিহাসের পাশাপাশি স্থাপত্য ও শিল্পকলার ওপর আগ্রহ বেশি থাকে। তাই আমরা তাদের বেছে বেছে সেইসব জায়গাগুলি ঘোরাই। খুশি হলে পারিশ্রমিকের পাশাপাশি মেলে মোটা টাকার বকসিস। আমরা চাই সরকার উদ্যোগ নিয়ে বিদেশি পর্যটকদের আনার ব্যবস্থা করুক।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 11 =