বুধবার সেনার পোশাকে আচমকা একদল যুবক-যুবতীকে ঢুকতে দেখা যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর তা নিয়ে বেশ কিছু তথ্য সামনে এনে বঙ্গ রাজনীতিতে নয়া এক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। প্রসঙ্গত, ওই দলটি নিজেদের ‘এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটির’ অংশ হিসাবেও দাবি করে। পরিচয় দেয় বিশ্ব শান্তি সেনা হিসাবে। সঙ্গে এও জানিয়েছিলেন, দেশের যেখানেই ঝামেলা হয় সেখানে পৌঁছে শান্তির আবহ তৈরি করা তাঁদের কাজ। দলের কর্মকর্তা কাজি সাদেক হুসেন নিজেকে এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি বলেও দাবি করেন।
তবে মূল ওঠে তাঁদের গায়ে সেনার পোশাক কেন এবং ঠিক কোন উদ্দেশ্যে তাঁরা যাদবপুরে ঢুকেছিলেন তা নিয়েই। ইতিমধ্যেই এ ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে পুলিশ। বিতর্কের মধ্যে যাদবপুর থানা থেকে তলব করা হয়েছে রেজিস্ট্রার ও ডিন অফ আর্টসকে। পাশাপাশি কাজি সিদ্দিকি হোসেনকেও তলব করা হয়েছে। এদিকে এই ইস্যুতেই সুর চড়িয়েছে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদ।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটির যে লেটার প্যাড রয়েছে সেখানে চিফ প্যাট্রন ও সেন্ট্রাল অ্যাডভাইজার হিসেবে নাম রয়েছে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের। টিএমসিপির যাদবপুর ইউনিটের চেয়ারপার্সন সঞ্জীব প্রামানিক বলেন, ‘বুধবার এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটির পক্ষ থেকে কিছু যুবক-যুবতী ভারতীয় সেনার নকল পোশাক পরে ক্যাম্পাসে ঢোকে। তাঁরা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি স্থাপন করতে এসেছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যেই আমরা সূত্র মারফত ওই সংগঠনের যে প্যাড আমরা পেয়েছি সেখানে চিফ অ্যাডভাইজার হিসাবে লেখা রয়েছে সিপিআইএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের নাম। আমাদের আশঙ্কা, বিকাশবাবু কী তাহলে আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত? এসব বজরং দল, শান্তিরক্ষা বাহিনী তো বিজেপি করে থাকে। তাহলে কী বিজেপি আর সিপিএম কী যাদবপুরে আঁতাত করেছে? আমাদের দাবি, যে তদন্ত চলছে সেখানে যেন বিকাশবাবুকে জেরা করা হয়।’
যদিও তৃণমূলের কথাকে বিশেষ আমল দিতে নারাজ সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘আমি তো এটা প্রথম জানলাম। প্যাডের কথাও প্রথম শুনলাম। এটা দেখে তো আমি অবাক। আমার নাম বিভিন্ন লোক বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করছে, টাকা তুলছে, মানবাধিকার সংগঠনের লোক বলছে। আমি বিস্মৃত পুরো ব্যাপরে। কী করব বলুন। আমি তো আর সবার পিছনে দৌড়ে বেড়াতে পারব না। আমি খুব একটা পাত্তা দিই না এসব ব্যাপারে। তবে এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর পিছনে চক্রান্ত আছে বলে মনে হয়। আর আমি চাই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ লালবাজার ধরে ব্যাপক তদন্ত করুক। সঙ্গে তদন্তটা করে রিপোর্টটা জনসমক্ষে দিয়ে দিক।’