পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি বারবার তোলপাড় হচ্ছে বিশ্বভারতীকে নিয়ে। কারণ, গত বেশ কয়েক মাস ধরে বিশ্বভারতীতে ঘটে চলেছে একের পর এক ঘটনা। জমি বিতর্ক থেকে শুরু করে আরও নানা ধরনের ইস্যু সামনে আসছে। যেখানে নাম জড়িয়েছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনেরও। আর এই জমি বিতর্কে বস্তক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তবে এই সব ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে বারংবার চলে আসতে দেখা যাচ্ছে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে। কারণ, রাজনৈতিক মহলের ধারনা, তাঁর একাধিক পদক্ষেপ বা মন্তব্য বিতর্ক উসকে দিয়েছে বারবার।এবার এই বিশ্বাভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধেই শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে এক চিঠি পাঠালেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। এই চিঠিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে রয়েছে একগুচ্ছ অভিযোগ। মূলত এই চিঠিতে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীয় পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট এবং ছাত্রছাত্রীদের অযথা আইনি বিপাকে জড়ানোর অভিযোগ তোলেন তিনি। তৃণমূল সাংসদের আবেদন, এ বিষয়ে যেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিশ্বভারতীর তরফে শতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকারের দাবি, এসব মামলার জেরে পড়ুয়ারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক মধ্যবিত্ত পড়ুয়ার পক্ষে মামলার খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। যেখানে উপাচার্যের ভূমিকা হওয়া উচিত ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে, সেখানে তিনি ঠিক উলটো কাজ করছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। শুধু বক্তব্য পেশই নয়, এই চিঠির সঙ্গে তিনি প্রমাণ স্বরূপ তিনি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে লেখা চিঠির সঙ্গে দু’টি তালিকাও সংযোজন করেন।
এখানেই শেষ নয়, চিঠিতে জহর সরকার আরও উল্লেখ করেছেন, কথায় কথায় বিশ্বভারতীর উপাচার্য পড়ুয়া, অধ্যাপকদের সাসপেন্ড করেন। এটা যে উপাচার্যের ব্যক্তিগত আক্রোশ, তা বোঝাই যায়। আর বিশ্বভারতীর মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ ধরনের বিতর্কে বারবার জড়িয়ে পড়ায় কেন্দ্রীয় তহবিলের টাকাপয়সাও ঠিকমতো মিলছে না। ফলে পরিকাঠামো উন্নয়নে খামতি থেকে যাচ্ছে বলে জহর সরকারের অভিযোগ। তবে অধ্যাপকদের সাসপেনশন প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি তৃণমূল সাংসদ।