নিজস্ব প্রতিবেদন, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার কাশীপুর থানার গৌরাঙ্গডি গ্রামের গণপিটুনির শিকার বলে দাবি করা তিন সন্ন্যাসীকে নিয়ে শনিবার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো পুরুলিয়া শহরের কালী মন্দিরে পুজো দিলেন।
জানা গিয়েছে, তিন সন্ন্যাসী সহ পাঁচজন উত্তরপ্রদেশের বেরেলি থেকে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার কাশীপুর থানার গৌরাঙ্গডি গ্রাম দিয়ে যাচ্ছিলেন। মধুর গোস্বামী ও তা¥র দুই ছেলে প্রমোধ ও সুনীল গোস্বামী গঙ্গাসাগরের উদ্দেশ্যে তাঁদের গাড়ি গ্রামে এসে পৌঁছয়। সেই সময় তাঁদের গাড়িটিকে আটকানো হয়। তারপর তাঁদেরকে ঘিরে ধরে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর হয় তাঁদের গাড়ি। পুলিশ খবর পেয়ে তাঁদের উদ্ধার করে সুরক্ষিত স্থানে রাখে। শুক্রবার খবর পেয়ে কাশীপুর থানায় গিয়ে বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো ও বিজেপি নেতৃত্ব সন্ন্যাসীদের পুরুলিয়ায় নিয়ে আসেন।
শুক্রবার প্রমোধ গোস্বামী কাশীপুর থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে কাশীপুর থানার পুলিশ। শনিবার তাদের রঘুনাথপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। সাধু নিগ্রহের ঘটনায় ৫ জনের ৪ দিন পুলিশ হেপাজত, ৭ জনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেয় রঘুনাথপুর মহকুমা আদালত। ধৃতদের নাম সুনীল বাউরি, বিমল কৈবর্ত, অনিল কৈবর্ত, হীরালাল প্রামাণিক, পল্টু হালদার, রাজেশ হালদার, মিহির কৈবর্ত, মলয় দে, অনন্ত হালদার, মেঘনাথ দে, রাজকুমার হালদার, তারকনাথ হালদার।
বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, সন্ন্যাসীদের গাড়ি যখন কাশীপুর থানার গৌরাঙ্গডি গ্রামে পৌঁছতেই শেখ আনোয়ার নামে এক সিভিক ভলেন্টিয়ার তাঁদের গাড়ি আটকান। তারপর স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে তা¥দের ব্যাপক গণপিটুনি দেন। তাঁদের উলঙ্গ করে পিটুনি দেওয়া হয়। এই গণপিটুনির শিকার সন্ন্যাসীদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় তাঁদের পেছনের দরজা দিয়ে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে কাশীপুর থানার পুলিশ। সাংসদ নিগ্রহের ঘটনার জন্য সন্ন্যাসীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন।
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘এটি গুজবের জেরে ঘটে যাওয়া একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা। সেটাকে বিজেপি রাজনৈতিক রঙ দিচ্ছে। ওই ঘটনার নিন্দা আমরাও করছি। মনে রাখতে হবে পুলিশ অত্যন্ত সক্রিয় ছিল। সেই জন্যই পুলিশও ঘটনাস্থলে গিয়ে তা¥দের উদ্ধার করেছে এবং সাধুরাও সেটা স্বীকার করেছেন।’