সরকারি ওয়েব পোর্টাল ব্যবহার করে প্রতারণা চক্রের হদিশ বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের, ধৃত ৩

ফের সরকারি সাইবার ওয়েব পোর্টালের অপব্যবহার করে প্রতরণার অভিযোগ। আর এই প্রতারণার কাজ চলতো রীতিমতো ভুয়ো কল সেন্টার খুলে। এমন অভিযোগ জানতেই তদন্তে নামেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকেরা। এরপর এই ঘটনায় জড়িত থাকা অপরাধে সেক্টর ফাইভে হানা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে। ধৃতদের নাম রাজেশ কেওয়াত, রওশান কুমার, ও রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের তল্লাশি চালিয়ে বাজেয়াপ্ত হয় ৪০টি মোবাইল, ২০০ কম্পিউটার, ৩ ল্যাপটপ, ১০ ব্যাঙ্কের চেকবুক ও ১২টি ডেবিট কার্ড, ৪টি স্ট্যাম্প , ৪টি হার্ডডিস্ক, ৮টি রাউটার।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৩ শে জানুয়ারি। উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের বাসিন্দা মঞ্জু শর্মার মোবাইলে একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন আসে। তাতে ফোনেপ অপর প্রান্ত থেকে নিজেকে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি জানান, মঞ্জুদেবী তিন-চার হাজারের গিফট ভাউচার উপহার পেয়েছেন। আর সেই গিফট ভাউচার পেতে একটি লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে বলেও জানানো হয়। কথামতো মঞ্জুদেবীর ফোনে লিঙ্কও আসে। ওই লিঙ্কে ক্লিক করে ক্রেডিট কার্ডের সম্পূর্ণ তথ্য দিয়েও দেন মঞ্জুদেবী। এরপরই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫ হাজার টাকা উধাও হয়ে যায়।
এরপরই এই ঘটনার কথা পরিবারের সদস্যদের সমস্ত কথা জানালে প্রতারিত মহিলার মেয়ে অনলাইনে অভিযোগ দায়ের করার জন্য পোর্টাল অনুসন্ধান করতে যান। সেইখানে ‘অনলাইন লিগাল ইন্ডিয়া’ নামে একটি ওয়েবসাইট খুঁজে পান তিনি। সেখানেও ঘটে আরও এক প্রতারণা। কারণ, মঞ্জুদেবীর কন্যা যে পোর্টালটি খুঁজে পায় তাও ছিল জাল পোর্টাল। সেই ওয়েবসাইটে যাবতীয় তথ্য এবং বিবরণ দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, এই অভিযোগ করার জন্য ফি বাবদ ১ হাজার ১৮০ টাকাও নেওয়া হয়। এরপরেই প্রতারকরা প্রতারিত ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য নিয়ে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে প্রবেশ করে প্রতারিত মহিলার তথ্য ফিলাপ করেন বলে অভিযোগ। শুধুমাত্র কত টাকা তার সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে কোন ব্যাঙ্ক থেকে প্রতারণা হয়েছে সেই সমস্ত তথ্য দিতেন না প্রতারকরা। তার ফলে উক্ত ব্যক্তির সঙ্গে আদৌ প্রতারণা হয়েছে কি না, সরকারি সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে সুনিদিষ্ট তথ্য থাকত না। প্রতারিত হওয়া ব্যক্তিরা যখন আরটিআই করে জানতে চাইতেন তাঁদের কেসের অবস্থান সম্পর্কে, সেই রকম কোনও তথ্যপাওয়া যেত না। এই ধরনের একাধিক আরটিআই করে জানতে চাওয়ার অভিযোগ বিধান নগর সাইবার ক্রাইম শাখায় আসে। সেই মতো বিধান নগর সাইবার ক্রাইম শাখার তদন্তকারী আধিকারিকরা প্রতারিত মহিলাকে ডেকে পাঠিয়ে সমস্ত ঘটনা জানার চেষ্টা করেন। এরপর বিধান নগর সাইবার ক্রাইম শাখা পুলিশ সেক্টর ফাইভে অভিযান চালিয়ে তিন মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − seven =