হাওড়ার শ্যামপুরের শ্লীলতাহানির ঘটনায় আরও এক প্রধান অভিযুক্ত টিটন বাগকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। মেয়ের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় বাবাকে পিটিয়ে খুন করার ঘটনায় শেষমেশ তিন অভিযুক্তই আপাতত পুলিশের জালে। এই ঘটনায় শ্যামপুর থানার পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজুও করেছে। সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে নাবালিকার বাবার দেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। পাশাপাশি এই ঘটনায় অভিযুক্ত টিটন পলাতক থাকায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যত দ্রুত সম্ভব বাকি অভিযুক্তদের ধরার ব্যাপারে আশ্বাস দেয় পুলিশ। এরপর বুধবার সকালেই টিটনকে গ্রেপ্তার করে শ্যামপুর থানার পুলিশ।
প্রসঙ্গত, শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় মদ্যপ যুবকদের হাতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের পরিবারের সদস্যরা দুই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শ্যামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। মৃতের পরিবারের বয়ান ও অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩৪১, ৩২৫, ৩০৮, ৩০২, পকসো ৮, ৩৪ ধারায় মামলাও রুজু হয়। পুলিশের কাছে যে অভিযোগ পত্র জমা পড়ে তাতে একই পরিবারের দুই ভাই কিল্টন বাগ এবং টিটন বাগ নামে দুই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত টিটন পলাতক ছিল। এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের পর মৃতের দেহটি গ্রামে নিয়ে আসা হয়। দেহ আসার পরেই গ্রামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। গোবিন্দপুরে শববাহী গাড়ি থেকে মৃতদেহ রাস্তায় নামিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এই খুনের ঘটনার সঙ্গে আরও দুজন যুক্ত রয়েছে বলে দাবি করেন স্থানীয়রা। অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান শুরু হয়। মৃতের দাদার অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রামবাসীরা জানায়, অভিযুক্তরা মোট তিনজন ছিল। তারা ওই এলাকায় চোলাই মদের ব্যবসা করে ও এলাকায় দাপিয়ে বেড়াত। নক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক অপরাধীকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান স্থানীয়রা।
ঘটনার সূত্রপাত , গত রবিবার সন্ধ্যায়। গোবিন্দপুরে টিউশন পড়তে গিয়েছিল দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী। রাত পৌনে ৯ টা নাগাদ সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় গোবিন্দপুর ভাগাড়ের কাছে অভিযুক্তরা তার পথ আটকায়। তারা ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলের কিছুটা দূরে পাড়ার মোড়ে মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ওই নাবালিকার বাবা। সেই সময় মেয়ের চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তিনি। প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা তাঁকে একটি ফাঁকা জায়গায় টেনে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে প্রথমে ঝুমঝুমি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। সোমবার বিকেলে মৃত্যু হয় তাঁর।