ভোট পরবর্তী হিংসায় আগামী ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকারের সাক্ষী দিতে যাওয়ার কথা। কিন্তু তার আগে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানানো হল মৃত অভিজিৎ সরকারের পরিবারের তরফ থেকে। প্রসঙ্গত, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিনই কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে দৃষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নাম জড়ায় তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালের। ঘটনার তদন্তে বিধায়ক পরেশ পালকে আগেও তলব করা হয়েছিল। সরকার পরিবারের দাবি, সেই পরেশ পালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার আগেই বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকজন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই এফআইআর দায়ের করেন বিশ্বজিৎ।
এই প্রসহ্গে বিশ্বজিৎ সরকার জানান, শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ একদল লোক তাঁদের বাড়িতে আসে। তার মধ্যে ছিলেন অভিজিৎ খুনে অভিযুক্তদের আইনজীবী। তাঁরা এসে জোর করে অভিজিৎ সরকারের মাকে বাড়ি থেকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলেই অভিযোগ। এদিকে তাঁদের কাছে এই জিজ্ঞাবাদের জন্য আদালতের কোনও অনুমতি ছিল না বলেই দাবি করেন বিশ্বজিৎ। আরও অভিযোগ, যাঁরা এসেছিলেন তাঁরা জোর করে কোনও কাগজে সই করতে বলেছিলেন ও মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলেছিলেন। এদিকেবর্তমানে তাঁদের বাড়িতে সবসময় মোতায়েন থাকে পুলিশ।বিশ্বজিতের অভিযোগ, ঘটনার সময় পুলিশকে ক্যামেরা অন করতে বলা হলে তিনি জানান, ক্যামেরা অন হচ্ছে না। এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ ও আতঙ্কিত সরকার পরিবার।এই প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎবাবু এও জানান, ২৮ তারিখে পরেশ পালের বিরুদ্ধেই সাক্ষ্য দেওয়ার কথা। সে কারণেই এভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, অভিজিৎ খুনের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। তদন্তে অনেক বেশি সময় নেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেন বিশ্বজিৎ সরকার।
এদিকে দুষ্কৃতীদের আইনজীবীর এই মানসিক চাপে তাঁর মা অসুস্থ হয়েছে পড়েন বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি এও জানান, ঘটনার পরই তাঁর মাকে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। পরে বাড়িতে ফিরলেও ট্রমাতে রয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় এ প্রশ্নও তিনি করছেন, অভিজিতের পর বিশ্বজিতের কোনও বিপদ হবে না তো তা নিয়েই। স্বাভাবিক ভাবেই এই আতঙ্কে এখন দিন কাটাচ্ছেন বিশ্বজিৎবাবুর মা।
এই ঘটনায় অবশ্য মুখ খুলেছেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তিনি জানান, ‘ওই পরিবারের এক যুবক অভিজিৎ মারা গিয়েছেন, এটা দুর্ভাগ্যের। কিন্তু তার জন্য পরিবারের তরফে পরেশের নাম জড়ানো হচ্ছে, এটা ঠিক নয়।’