এতদিন ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জামে দাপট দেখাচ্ছিল বিভিন্ন চিনা কোম্পানি। বাদ যায়নি চিনা বাল্বও। এবার ঘুড়ি ওড়ানোর লাটাইয়ে চিনের দাপট উপচে পড়ল মালদার বিভিন্ন বাজারে। এক প্রকারের প্লাস্টিকের লাটাই নাকি চোরাপথে নেপাল হয়ে শিলিগুড়ি দিয়ে বিস্তার হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। যার নেপথ্যে রয়েছে চিনা সামগ্রী। চিনা লাটাইয়ের দাপটে এখন বেতের তৈরি লাটাইয়ের চাহিদাও কমছে বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, শীতের মরশুম শুরু হতেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রবণতা থাকে কলেজ পড়ুয়া থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে। খোলা মাঠে অথবা বাড়ির ছাদ থেকে বিশেষত ছুটির দিনগুলিতেই ঘুড়ি ওড়ায় অনেকেই। যার জন্য প্রয়োজন হয় লাটাইয়ের। এই লাটাইয়ের মাধ্যমে ঘুড়িতে সুতো পেঁচিয়ে রাখা হয়। ধীরে ধীরে সেটি সেই সুতোর মাধ্যমে ঘুরিয়ে ওড়ানো হয় আকাশে। কিন্তু এবারে দেখা যাচ্ছে মালদার বাজারে প্লাস্টিক এবং ফাইবারের এক প্রকারের লাটাই দেদার বিক্রি হচ্ছে। বেতের লাটাইয়ের দামের থেকেও সস্তা আধুনিক এই লাটাই যা চিনা লাটাই বলেই বাজারে চলছে। পাশাপাশি কাগজের ঘুড়ি বন্ধ হয়ে এখন প্লাস্টিকের ঘুড়ির বিক্রির চাহিদা বেড়েছে ক্রমাগত।
মালদা শহরের দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন মার্কেট, নেতাজি পুরো মার্কেট, রবীন্দ্র এভিনিউ, নেতাজি সুভাষ রোড, মকদমপুর মার্কেট সহ বিভিন্ন এলাকায় অলিগলির দোকানগুলিতেই মিলছে চিনা মাঞ্জা দেওয়া প্লাস্টিকের ও ফাইবারের এক প্রকারের লাটাই। রীতিমতো রেডিমেড চিনা মাঞ্জা এই লাটাইগুলি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। বেতের তৈরি লাটাই কিনতে গেলে যার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পরে। অত্যন্ত সস্তা হওয়ার ফলে এই ধরনের চিনা লাটাই এখন বাজার কাপাচ্ছে। ঘুড়ি, লাটাই বিক্রেতাদের একাংশের বক্তব্য, মানুষ সস্তার জিনিস খুঁজে। ফলে এই ধরনের প্লাস্টিক ফাইবারের লাটাইয়ের চাহিদা ক্রমাগত বেড়েছে। শীতের মরশুমে মালদায় প্রধানত ঘুড়ি ওড়ানোর প্রবণতা দেখা যায়। ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে মাঞ্জা দেওয়া সুতো-সহ লাটাই বিক্রি করা হচ্ছে খদ্দেরদের কাছে। যার ফলে অনেকেই বেতের তৈরি লাটাই কেনার দিকে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
এদিকে মানিকচকের শেখপুরা এলাকার লাটাই প্রস্তুতকারক এমাদুল শেখ, বদিরুদ্দীন শেখদের বক্তব্য, এটি এক ধরনের কুটির শিল্প বলা যেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা শীতের মরশুমে লাটাই বিক্রি করে থাকি। শহরের বিভিন্ন বাজারগুলিতে এবছর সেই বিক্রির চাহিদা অনেকটাই কমে গিয়েছে। প্লাস্টিক ও ফাইবারের এইসব লাটাই কোথা থেকে আসছে, সেটা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। এব্যাপারে প্রশাসনকে অন্তত তদারকি করে দেখা উচিত।