গুজরাতের মোরবীতে ঝুলন্ত সেতুর দুর্ঘটনা থেকে আগাম শিক্ষা নিয়ে এবার রাজ্যের বিভিন্ন সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দিকে নজর দিয়েছে নবান্ন। দ্রুততার সঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পুরাতন ও ব্যাস্ত সেতুগুলোর হালহকিকত জানতে সেগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দিকে গুরুত্ব দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
হাওড়া ও কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন গড়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ৭০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। আর এই তথ্য সামনে আসার পরই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে রাজ্যের মুখ্য প্রশাসনিক ভবন নবান্নের।
সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকে প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকবে সাঁতরাগাছি সেতু। দেড় মাস ধরে চলবে সেতুর মেরামতির কাজ।
নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ওপর সাঁতরাগাছি রেল সেতুর গার্ডার বদলানোর কাজ করা হবে। আর সেতুটির বাকি অংশের মেরামতির কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশ জানা যাচ্ছে ৫ নভেম্বর থেকে শুরু হতে পারে এই কাজ। তবে প্রশ্ন উঠছে সাঁতরাগাছি সেতু দিয়ে যে পরিমাণে যানবাহন চলে তাঁদের কোন রাস্তা দিয়ে ঘোরানো হবে তা নিয়ে। এই সমস্যার সমাধানে নিজেদের মধ্যে আলোচনাতে বসতে চলেছে রাজ্য ট্রাফিকের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী ট্রেলারগুলিকে কোন দিক দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে তাঁর সমাধান সূত্র খুঁজতে আলোচনাতে অংশ নেবে রাজ্যের পূর্ত দফতরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরাও।
ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে হাওড়া সিটি পুলিশ কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠীর নেতৃত্বে সিটি পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা সাঁতরাগাছি সেতু ও কোনা এক্সপ্রেসওয়ে পরিদর্শন করেন। প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী বলেন, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের চার লেনের রাস্তা সাঁতরাগাছি সেতুতে গিয়ে দু’লেন হয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই সেতুর উপরে গাড়ির প্রচুর চাপ থাকে। যানবাহনকে সেতু মেরামতের সময় কোথা দিয়ে ঘোরানো হবে বা কীভাবে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হবে এখন সেটাই সরেজমিন খতিয়ে দেখা চলছে ।
যদিও গোটা প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করতে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৮০০ পুলিশকর্মী মোতায়েত করা হবে বলেই জানান ডিসি ট্র্যাফিক (হাওড়া) অর্ণব বিশ্বাস। তিনি আরও জানান এছাড়া বিভিন্ন স্থানে পুলিশের গার্ডরেল ও ভ্যান রাখার পরিকল্পনা রয়েছে । যে কোনও সমস্যা হলে এবং যানজট হলে সহজেই তাঁর নোকাবিলা করা সম্ভব হয়।
প্রসঙ্গত এর আগে ২০১৬ সালে একবার সেতুর গার্ডার মেরামত করার কাজ করা হয়। আবার ছয় বছর বাদে রাজ্য পূর্ত দফতর ও কেএমডি–এর ইঞ্জিনিয়াররা সেগুলিকে ফের মেরামতির প্রয়োজন আছে বলেই রাজ্য সরকারকে জানিয়েছেন। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরেই সাঁতারাগাছি সেতুকে চার লেনের সেতুতে পরিণত করার পরিকল্পনা এখনও বিশ বাঁও জলে পড়ে রয়েছে। সেক্ষেত্রে দক্ষিণ পূর্ব রেলের জায়গাতে অদূর ভবিষ্যতে যদি ওই চার লেনের সেতু নির্মাণের কাজ রাজ্য সরকার শুরু করতে পারে সেক্ষেত্রে নিত্যযাত্রী সহ ওই রাস্তায় যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষের কষ্ট অনেকটাই কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও সেতুর এই সম্প্রসারণের কাজের জন্য আটকে রয়েছে পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মতো বাবুঘাট থেকে সাঁতরাগাছিতে বাস স্ট্যান্ড সরিয়ে আনার কাজও।